পুলিশের ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণেই কি খুন দত্তপুকুরে? - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Friday, February 7, 2025

পুলিশের ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণেই কি খুন দত্তপুকুরে?



নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর ২৪ পরগনা: দুষ্কর্মের পথ ছেড়ে পুলিশের ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণেই কি নৃশংস ভাবে খুন হতে হল গাইঘাটা থানার আঙ্গুলকাটা গ্রামের হজরত লস্করকে? প্রমাণ লোপাটের জন্য মাথা কেটে অন্যত্র ফেলা ও নিহতের হাত পায়ের অংশ পোড়ানো হয়? তদন্ত বিভ্রান্ত করতে যৌনাঙ্গে আঘাত নাকি পথের কাঁটা ও ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে বিবাদের কারণে খুন? পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে এমন অনেক তথ্য। দত্তপুকুরের মালিয়াকুরের টমেটো বেগুন ক্ষেত এলাকায় কাদের সাহায্যে খুনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে? মাথার খোঁজ ছাড়াও বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর পেতে ম্যারাথন জেরা করবে পুলিশ। 


পুলিশ সূত্রের খবর , মৃত হজরত লস্কর ছিল এক কুখ্যাত দুষ্কৃতী গ্যাঙের সদস্য। চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও পাচারের কাজে জড়িত ছিল সে। ব্যারাকপুর কমিশনারেট ও হাওড়া কমিশনারেটের আওতায় একাধিক থানায় অভিযোগ রয়েছে হজরতের বিরুদ্ধে। বালি, নিশ্চিন্দা, বরানগর, উত্তরপাড়া এইসব এলাকায় চুরি, ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে। তদন্তকারী সূত্রের খবর, হজরতের হাত ধরেই তুতো ভাই ওবায়দুলের অন্ধকার জগতে আসা। 


পুলিশের একটি সূত্রের দাবী, কয়েক বছর আগে হজরতের সাথে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা চারশোগ্রাম সোনা নিয়ে গ্যাং এর বিবাদ শুরু হয়। শেষবার পুলিশের কাছে ধরা পড়ার পর অন্ধকার জগত থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায় সে। এক পুলিশ সদস্যের সাথে সখ্যতা শুরু হয়। গ্যাংয়ের বেশ কয়েকজন ধরা পড়ে পুলিশের জালে। দুই চব্বিশ পরগনা জেলা এবং সীমান্ত এলাকার দুষ্কৃতিদের গতিবিধি নজরদারি এবং দুষ্কৃতিদের ধরপাকড়ের ঘটনায় গ্যাং এর সদস্যরা হজরতকেই সন্দেহ করে। পুলিশের দাবী, পাশের এক জেলার থানা এলাকায় পুলিশের গাড়ি চালাত হজরত। শাহিনাকে বিয়ে করে স্বাভাবিক জীবনযাপনও করছিল সে। তবে গ্যাংয়ের অনেকেই হজরতের কাছে থাকা চারশো গ্রাম সোনা ও ডাকাতির মোটা অংকের টাকার ভাগ চেয়ে না পেয়ে খুনের ফন্দি আঁটে। সেই মত করা হয় খুনের ষড়যন্ত্র। প্রলোভন দিয়ে মালিয়াকুর এলাকার চাষের খেতে ডাকা হয় হজরতকে। সেখানে মদের আসর বসানো হয়। অন্ধকার জগতের সাথে ছেড়েছিল মদ খাওয়া। সেকারনে হজরতের জন্য আনা হয় ঠান্ডা পানিয়। মৃত দেহের পাশ থেকে সেটি উদ্ধার করে পুলিশ। 


তদন্তকারী সূত্রের খবর, প্রাথমিক জেরায় ওবায়দুল গাজি ও পুজা দাস খুনের ঘটনা স্বীকার করেছে। মাথা কোথায় ফেলেছে সে ঠিকানা দিতে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করেছে। ধৃতদের ফোন থেকে উদ্ধার হয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। খুনের আগে যাদের সাথে কথা হয়েছিল তাদের কয়েকজনকে পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশের অনুমান তারাও খুনের সাথে জড়িত থাকতে পারে। 


তদন্তকারী সূত্রের দাবী, শাহিনাকে বিয়ে করার আগে পূজার সাথে হজরতের সম্পর্ক ছিল সম্প্রতি তা জানতে পারে ওবায়দুল। দুজনের মধ্যে কথাও হত। পুলিশের অনুমান, সম্পর্কের এই টানাপোড়েনকে কাজে লাগিয়ে গ্যাং এর বাকি সদস্যরা খুনের ঘটনা ঘটাতে পারে। পাশাপাশি ওবায়দুল হজরতদের গ্যাংকে দত্তপুকুরের মালিয়াকুর এলাকার কারা সাহায্য করেছিল এবং কোন যান ব্যবহার করে এলাকায় ঢুকে খুন শেষে এলাকা ছেড়েছে সেই খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে দত্তপুকুর থানার পুলিশ। 


ওবায়দুল বৃহস্পতিবার বারাসত থানা থেকে আদালতে যাওয়ার পথে বলে, 'আমি খুন করিনি।'বারাসত জেলা পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝারখাড়িয়া বলেন, "বেশ কিছু এভিডেন্সের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলা যাবে না।"

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad