প্রেসকার্ড নিউজ লাইফস্টাইল ডেস্ক, ০২ মার্চ: আজকাল, ব্যস্ত জীবন এবং কাজের মধ্যে, বাবা-মায়েদের কাছে এত সময় নেই যে তাঁরা তাদের সন্তানদের ভুলিয়ে-ভালিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে খাবার খাওয়াবেন। এমন পরিস্থিতিতে সময় বাঁচাতে অভিভাবকরা ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের সাহায্য নেন। শিশুরা মোবাইল বা ফোনের দিকে তাকিয়ে দ্রুত খাবার খেয়ে ফেলে। এতে তাদের মনোরঞ্জনের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। আর অভিভাবকরাও নিশ্চিত হয়ে পড়েন যে, ফোন বা টিভি দেখেই হোক, শিশু খাবার তো খাচ্ছে। কিন্তু আপনি কী জানেন আপনার এই শর্টকাট পদ্ধতি শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য কতটা বিপজ্জনক হতে পারে?
টিভি ও মোবাইল দেখে শিশুদের খাওয়ানো কতটা বিপজ্জনক?
এনভায়রনমেন্টাল জার্নাল অফ হেলথ নামের একটি ম্যাগাজিনে শিশুদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে, বিশ্বের অনেক বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায়। দেখা গেছে, যে শিশুরা টিভি বা মোবাইল দেখে খাবার খায়, তারা পরবর্তীতে খাবার নিয়ে ক্ষেপে যায়। এসব শিশুদের ছোটখাটো বিষয়েও রেগে যেতে দেখা গেছে। ১০ বছর পর্যন্ত বয়সী শিশুরা যারা খাওয়ার সময় টিভি এবং মোবাইল দেখে খায় তাদের স্থূলতার ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায় এবং তারা স্থূলতার শিকার হয়, যা অনেক রোগের জন্ম দিতে পারে।
সতর্ক করেছে ডব্লিউএইচও-ও
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন জারি করে শিশুদের পর্দা থেকে দূরে রাখতে সতর্ক করেছে। এই প্রতিবেদনে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের স্ক্রিন টাইম নির্ধারণ করা হয়েছে। এই শিশুদের অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম সরাসরি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। এই প্রতিবেদনে ডব্লিউএইচও শিশুদের মোবাইল, টিভি বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক গ্যাজেট থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
খাওয়ার সময় টিভি দেখার অসুবিধা-
১. খাওয়ার সময় টিভি দেখা মেটাবলিজমকে ধীর করে দেয়, যার ফলে শরীরে চর্বি জমতে শুরু করে।
২. টিভি দেখার সময় খাবার খেলে পুরো মনোযোগ টিভি বা ফোনে থাকে, যার কারণে শিশুরা অতিরিক্ত খেয়ে ফেলে।
৩. বেশিরভাগ শিশু টিভি এবং ফোন দেখলে, জাঙ্ক ফুড খেতেই পছন্দ করে।
৪. টিভি বা মোবাইল দেখে রাতের খাবার বা দুপুরের খাবার খেয়ে শিশুরা খুব দ্রুত মোটা হয়ে যায়।
৫. টিভি বা মোবাইল ফোন দেখে শিশুকে খাওয়ানোর ফলে পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে। তারা প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেতে পারে না।
৬. টিভি বা ফোন দেখার সময় আপনার শিশুকে খাওয়ানো তাদের মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ বাড়িয়ে দিতে পারে। খাওয়ার সময় তারা মানসিক চাপে পড়তে পারে।
৭. যেসব শিশু টিভি বা ফোন দেখে খাবার খায় তারা সামাজিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। তাদের দক্ষতা কমে যেতে পারে।
৮. শিশুরা টিভি এবং মোবাইল দেখার সময় কথা না বলে খাবার খায়, যা তাদের কথা বলার ক্ষমতা অর্থাৎ যোগাযোগের ওপর প্রভাব ফেলে।
৯. চোখের জল, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া বা শুষ্কতার সমস্যা।
১০. মোবাইল দেখার সময় শিশুরা খাবার চিনতে পারে না, তারা না জেনেই তাদের সামনে যা আসে তাই খেয়ে ফেলে।
১১. মোবাইল-টিভিতে হারিয়ে যাওয়ার কারণে জিনিস মনে রাখতে না পারা।
১২. মোবাইল টিভিতে ভিডিও দেখা এবং শোনা কম অভিব্যক্তিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
১৩. এটি তাদের ফোন-টিভিতে আসক্ত করে তুলতে পারে।
১৪. শিশুরা খিটখিটে, একগুঁয়ে এবং রাগী হয়ে ওঠে।
No comments:
Post a Comment