পাঁশকুড়ার পর হাবড়া! বিস্কুট চোর সন্দেহে নাবালকের নাক ফাটাল দোকানি, টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দিতে চাপ পুলিশের - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday, May 27, 2025

পাঁশকুড়ার পর হাবড়া! বিস্কুট চোর সন্দেহে নাবালকের নাক ফাটাল দোকানি, টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দিতে চাপ পুলিশের


উত্তর ২৪ পরগনা, ২৭ মে ২০২৫: চিপসের পর এবারে বিস্কুট চোর সন্দেহে ১৩ বছরের নাবালককে কাঠের টুকরো দিয়ে মেরে নাক ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক মুদি দোকানির বিরুদ্ধে। আরও অভিযোগ, জখম নাবালককে সিটি স্ক্যান করাতে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ পথ আটকে থানায় অভিযোগ না করে টাকা পয়সা নিয়ে মিটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। শেষমেষ থানায় অভিযোগ দায়ের, কিন্তু থানায় অভিযোগ দায়ের করার ১২ ঘন্টা কেটে গেলেও এখনও অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করেননি। অভিযুক্ত দিব্যি দোকানদারি করছেন সেই ছবি ধরা পড়েছে আমাদের সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরায়।


সোমবার বিকেলে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া থানার সংহতি স্টেশন লাগোয়া শলুয়া এলাকায়। আক্রান্ত নাবালকের বাবা সঞ্জয় হালদার জানান, তিনি তাঁর ছেলেকে সকালবেলা ২০ টাকা দিয়ে কাজে চলে যান। বিকেলে তার ছেলে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে খেলার মাঠে যাচ্ছিল, তখন সংহতি শলুয়া রেলগেট লাগোয়া শচীন্দ্রনাথ দাসের মুদি দোকানের সামনে বিস্কুট কেনার জন্য দাঁড়িয়ে পড়ে। সঙ্গে ছিল নাবালকের আরও পাঁচ বন্ধু। বিস্কুট কিনে টাকা দেওয়ার আগেই দুই বন্ধু চলে যায়। তখন শংকর পাল নামে পাশের এক দোকানদার এসে শচীন্দ্রনাথ দাসেকে বলেন, চলে যাওয়া দুই নাবালক হয়তো বিস্কুট নিয়ে পালিয়েছে। আর এই কথা শোনা মাত্র মুদি দোকানের মালিক শচীন্দ্রনাথ দাস দোকানের সামনে থাকা কাঠের টুকরো নিয়ে এই নাবালকদের ওপর চরাও হয়। ঠিক তখন তিন নাবালক পালিয়ে গেলেও সঞ্জয় হালদারের ছেলে সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়া নাবলকে ওই কাঠের টুকরো দিয়ে আঘাত করে নাক ফাটিয়ে দেয় দোকান মালিক। নাবালকের চিৎকারের ছুটে আসেন স্থানীয়রা, গল গল করে তখন নাক দিয়ে রক্ত পড়ছে নাবালকের।


নাবালকের বাবা সঞ্জয় হালদারের চঞ্চল্যকর অভিযোগ, ছেলেকে মিথ্যা অভিযোগে মারল। অথচ ছেলেকে ডাক্তারের কাছে না নিয়ে গিয়ে প্রমাণ লোপাটের জন্য দোকানের সামনে পরে থাকা তাজা রক্ত ধুতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন দোকান মালিক। সঞ্জয় হালদারের আরও চাঞ্চল্যকর দাবী, "মছলন্দপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ছেলেকে ডাক্তার দেখানোর পরে ডাক্তার বাবু ছেলেকে সিটি স্ক্যান করানোর কথা বলেন, সেইমতো ছেলেকে নিয়ে কলকাতা সিটি স্ক্যান করাতে যাচ্ছি, তখন সংহতি স্টেশনের কাছে পথ আটকায় হাবড়া থানার বাউগাছি পুলিশ ফাঁড়ির এস.আই সুব্রত নায়েক। এই পুলিশ কর্তার স্পষ্ট বক্তব্য, 'অভিযোগ না করে টাকা পয়সা দিয়ে মিটিয়ে নিন'।"


অবশেষে রাত ১২ টা নাগাদ হাবড়া থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। তবে অভিযোগ দায়েরের পর ১২ ঘন্টা কেটে গেলেও এখনও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। এদিকে এদিন সংহতির এই মুদি দোকানে গেলে দেখা যায় অভিযুক্ত শচীন্দ্রনাথ দাস দিব্যি দোকানদারি করছেন এবং তিনি সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন। পাশাপাশি তিনি জানান, 'আমি যখন লাঠি উঁচিয়ে শাসন করছিলাম তখন ঐ নাবালক পালাতে গিয়ে নাকে লেগে যায়।'


আক্রান্ত নাবালকের বাবা সঞ্জয় হালদার অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবী করেছেন। পাশাপাশি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। 


প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পাঁশকুড়ায় নাবালককে চিপস চুরির অপবাদ দেওয়া ও সেই বালকের আত্মহত্যার ঘটনা রাজ্য জুড়ে শোরগোল ফেলে দেয়। মিথ্যা অপবাদের জেরে এক নিষ্পাপ প্রাণ অকালে ঝরে যায়। সেই ঘটনার পরে ফের হাবড়ার এই ঘটনা এবং এখনও অভিযুক্ত গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad