লাইফস্টাইল ডেস্ক, ২৯ মে ২০২৫: লিভার আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা মস্তিষ্ক এবং হৃদয়ের মতোই জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আজকের ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রা এবং ভুল অভ্যাসের কারণে, এই অঙ্গটি অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। কখনও কখনও এর প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যায়, কিন্তু প্রায়শই মানুষ সেগুলি উপেক্ষা করে, যার কারণে পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে ওঠে। এর পিছনে অনেক কারণ থাকতে পারে যেমন খারাপ জীবনধারা, ভারসাম্যহীন খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ এবং সঠিক যত্নের অভাব। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন জাগে যে, আমরা কীভাবে আমাদের লিভারকে সুস্থ রাখতে পারি? তবে এটি করা সহজ। কিছু সহজ এবং কার্যকর প্রতিকার রয়েছে, যা আপনার দৈনন্দিন রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করে আপনি সহজেই আপনার লিভারকে ডিটক্স করতে পারেন এবং এটিকে সুস্থ রাখতে পারেন। যেমন -
লেবু জল দিয়ে দিন শুরু করুন-
সকালে ঘুম থেকে ওঠার সাথে সাথে এক গ্লাস হালকা গরম জলে অর্ধেক লেবু চিপে পান করা শুরু করুন। লেবুতে উপস্থিত ভিটামিন সি কেবল লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করে না, এটি শরীরকে ডিটক্সিফাই করতেও সাহায্য করে। এই অভ্যাস লিভারকে পরিষ্কার রাখতে এবং সুস্থ রাখতে খুবই উপকারী। তবে, নতুন করে শুরুর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নিন।
খাদ্যতালিকায় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন-
আপনার খাদ্যতালিকায় আংশিক শস্য, ডাল, তাজা ফল এবং সবুজ শাকসবজির মতো ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। এগুলি হজম ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে এবং লিভারের ওপর চাপ কমায়। বিশেষ করে পালং শাক, ফুলকপির মতো সবুজ শাকসবজি প্রাকৃতিক উপায়ে লিভারকে বিষমুক্ত করতে সহায়ক।
কাঁচা ফল এবং সবজিও অন্তর্ভুক্ত করুন-
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, আপনার খাদ্যতালিকায় কমপক্ষে ৪০ শতাংশ কাঁচা ফল এবং সবজি অন্তর্ভুক্ত করা উপকারী। কাঁচা খাবারে পাওয়া এনজাইমগুলি হজমশক্তি উন্নত করে এবং লিভারের পরিষ্কার করার ক্ষমতা বাড়ায়। আপনি প্রতিদিন গাজর, বিটরুট, পালং শাক বা গমের ঘাসের রসও পান করতে পারেন, এগুলি লিভার পরিষ্কার করতে খুবই সহায়ক প্রমাণিত হয়।
এইভাবে প্রতিদিন জল পান করুন-
শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে জল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সুপারিশ করেন যে, প্রতিদিন কমপক্ষে ছয় থেকে আট গ্লাস জল পান করা উচিৎ। এ ছাড়া, দিনে দুই থেকে তিন গ্লাস গরম জল পান করাও গুরুত্বপূর্ণ। এটি কেবল লিভার এবং কিডনিকে বিষমুক্ত করে না, ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং অ্যালকোহল গ্রহণ কমিয়ে দিন-
প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং অ্যালকোহলের অতিরিক্ত ব্যবহার শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। এগুলি টক্সিন বৃদ্ধি করে এবং লিভারের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, যার ফলে এর কার্যকারিতা প্রভাবিত হয়। তাই, এগুলি গ্রহণ এড়ানো উচিৎ।
পরিশোধিত চিনি এবং পরিশোধিত ময়দার ব্যবহার সীমিত করুন-
লিভারকে সুস্থ রাখতে, যতটা সম্ভব কম পরিশোধিত চিনি এবং পরিশোধিত ময়দা খান। এই দুটিই লিভারকে অত্যধিক পরিশ্রমী করে তোলে এবং ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। মুগ, কালো ছোলা, কাঁচা ছোলার মতো অঙ্কুরিত ডাল লিভারের পরিষ্কারক বৈশিষ্ট্য বাড়ায়। এছাড়াও, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, দুধ, লাল মাংস, মুরগি ইত্যাদির মতো স্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াও কমানো উচিৎ।
No comments:
Post a Comment