প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ২৪ মে ২০২৫, ০৮:২০:০১ : পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের পদক্ষেপ অব্যাহত রয়েছে। ভারত তাদের সঠিক পথে আনার জন্য প্রতিটি উপায়ে এর জবাব দিচ্ছে। অপারেশন সিন্দুরের পর বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে তাদের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে। গত ৫০ ঘন্টা পাকিস্তানের জন্য বিশেষভাবে কঠিন ছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর পর্যন্ত সকলেই পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ভারত স্পষ্টভাবে বলেছে যে পারমাণবিক বোমার হুমকি সহ্য করা হবে না।
অপারেশন সিন্দুরের পর, ভারত কোনও অবস্থাতেই পাকিস্তানের সন্ত্রাস সহ্য করবে না। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং অন্যান্য নেতারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছেন এবং পাকিস্তানকে উন্মোচন করছেন। এর পাশাপাশি, তারা বিশ্বের সামনে পাকিস্তানের বাস্তবতা তুলে ধরছেন।
রাজস্থানের বিকানেরে এক জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পাকিস্তানকে স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, "সিন্দুর বারুদে পরিণত হলে কী হয় তা বিশ্ব দেখেছে। বন্ধুরা, ২২ তারিখের হামলার জবাবে, ২২ মিনিটের মধ্যে সন্ত্রাসীদের ৯টি বৃহত্তম আস্তানা ধ্বংস করা হয়েছে।"
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন যে যদি তারা এখনই তাদের পথ সংশোধন না করে, তাহলে পরিণতি খারাপ হবে, তারা প্রতিটি পয়সার উপর নির্ভরশীল হবে, তারা প্রতিটি ফোঁটা জলের জন্য আকুল হবে। যদি তারা এখনই সন্ত্রাসবাদ ত্যাগ না করে, তাহলে তাদের বাঁচানোর কেউ থাকবে না, ভারত আবার তাদের ঘরের ভেতরে তাদের আক্রমণ করবে। তিনি বলেন যে পাকিস্তানের সাথে কোনও বাণিজ্য হবে না, কোনও আলোচনা হবে না, কোনও জল সরবরাহ করা হবে না, যদি পাকিস্তান এখনও কথা বলতে চায়, তবে তা কেবল পাক অধিকৃত কাশ্মীরের অবৈধ দখল ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে হবে।
বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর তিনটি ইউরোপীয় দেশেই পাকিস্তানের নিন্দা করেছেন। জার্মানি থেকে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেছেন যে ভারত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। তিনি আরও বলেছেন যে ভারত পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইলের কাছে মাথা নত করবে না। এই বিষয়ে কারও কোনও ভ্রান্ত ধারণা থাকা উচিত নয়। এর আগেও, তিনি অন্যান্য অনেক দেশে পাকিস্তান এবং তার সন্ত্রাসবাদকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করেছেন। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর যে কোনও দেশেই পাকিস্তানকে উন্মোচিত করার জন্য কাজ করছেন।
বিএসএফের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শাহ বলেন যে, "আমাদের প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি, আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলির সঠিক তথ্য এবং সেনাবাহিনীর আশ্চর্যজনক অগ্নিশক্তি প্রদর্শনের ফলেই অপারেশন সিন্দুর সংঘটিত হয়েছিল। পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার পর, আমরা সন্ত্রাসীদের এবং তাদের আস্তানাগুলিকে লক্ষ্য করেছিলাম কিন্তু পাকিস্তান এই হামলার জন্য দায় স্বীকার করেছিল, যা প্রমাণ করে যে তারা একটি সন্ত্রাসবাদ-সমর্থক দেশ।"
জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি পার্বত্যনেনি হরিশ শুক্রবার জাতিসংঘে পাকিস্তানকে তিরস্কার করেছেন। তিনি বলেছেন যে, যে দেশ সন্ত্রাসবাদী এবং বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে পার্থক্য করে না, তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলার কোনও অধিকার নেই। তিনি বলেন যে, ভারত কয়েক দশক ধরে তার সীমান্তে পাকিস্তান-স্পন্সরিত সন্ত্রাসী হামলার মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মুম্বাই শহরে ২৬/১১-এর ভয়াবহ হামলা থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিলে পহেলগামে নিরীহ পর্যটকদের বর্বর গণহত্যা।
তিনি বলেন যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ করা এবং যারা এর পৃষ্ঠপোষকতা করে এবং এর পক্ষে লড়াই করে তাদের বহিষ্কার করা।
ভারত যেখানেই পাকিস্তানকে ভালো এবং দরিদ্র হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করে, সেখানেই পাকিস্তানকে উন্মোচিত করবে। ভারতীয় কূটনীতিক অনুপমা সিং মাত্র ১০০ সেকেন্ডের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) প্ল্যাটফর্মে পাকিস্তানকে তিরস্কার করেছেন। তিনি বলেন, "আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক এবং সংগঠকরা পাকিস্তানের মাটি থেকে কাজ করে।"
পাকিস্তান সিন্ধু জল চুক্তি সম্পর্কেও তার মিথ্যা গল্প চালিয়ে যাচ্ছে এবং বিষয়টিকে জটিল করার চেষ্টা করছে। পাকিস্তানকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহিতকারী একটি দেশ এর শিকার হওয়ার ভান করতে পারে না।
অপারেশন সিন্দুরের পর, ভারতীয় সাংসদরা ৩৩টি দেশ পরিদর্শন করে পাকিস্তানের মুখোশ উন্মোচন করতে যাচ্ছেন। কিছু সদস্য পাকিস্তানের বাস্তবতা সম্পর্কে বিশ্বকে জানাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ আগামী দিনে জানাবেন। ভারতের এই কড়া মনোভাবের পরেও পাকিস্তানের অবস্থা খারাপই রয়ে গেছে।
No comments:
Post a Comment