বিনোদন ডেস্ক, ১৮ জুন ২০২৫: বস্তায় আদা চাষ একটি আধুনিক ও লাভজনক পদ্ধতি, যা শহুরে ও সীমিত জায়গায় কৃষি চর্চার জন্য উপযোগী। এই পদ্ধতিতে কম খরচে ও কম জায়গায় আদা চাষ করা সম্ভব, যা কৃষকদের জন্য একটি ভালো বিকল্প। এছাড়াও যাদের বাড়িতে বাগান বা শাকসবজি ফলানোর অভ্যাস রয়েছে, তাঁরাও বস্তায় আদা চাষ করতে পারেন। বস্তায় আদা চাষ কীভাবে করবেন, আসুন জানা যাক -
বস্তায় আদা চাষের পদ্ধতি-
১. বীজ প্রস্তুতি:
৪০-৫০ গ্রাম ওজনের সুস্থ ও রোগমুক্ত আদা বীজ নির্বাচন করুন।
বীজ কন্দগুলো ৪-৬ টুকরা করে কাটুন, প্রতিটি টুকরোতে ২-৩টি চোখ থাকতে হবে।
কাটা অংশে ছাই বা থিরাম লাগিয়ে দিন।
২. মাটি ও সার মিশ্রণ:
প্রতি বস্তায় ১০-১২ কেজি মাটি, ৫ কেজি গোবর, ২ কেজি ভার্মি কম্পোস্ট, ২০ গ্রাম টিএসপি, ৭.৫ গ্রাম এমওপি, ১ কেজি ছাই, ১০ গ্রাম কারটাপ, ৫ গ্রাম জিংক ও ৫ গ্রাম বোরন মিশিয়ে ১৫-২০ দিন আগে পলিথিনে ঢেকে রাখুন।
৩. বীজ রোপণ:
বীজ রোপণের উপযুক্ত সময় এপ্রিল-মে মাস।
প্রতি বস্তায় ৪০-৫০ গ্রাম বীজ ৪-৫ ইঞ্চি গভীরে রোপণ করুন।
বীজের চোখ উপরের দিকে রাখুন।
৪. পরিচর্যা:
প্রথম দিকে হালকা সেচ দিন, তবে জলাবদ্ধতা এড়িয়ে চলুন।
সার প্রয়োগ: রোপণের ৫০ দিন পর ইউরিয়া ও এমওপি, ৮০ ও ১১০ দিন পর বাকি সার প্রয়োগ করুন।
আগাছা দেখা দিলে পরিষ্কার করুন।
পোকামাকড়ের আক্রমণ হলে কীটনাশক ব্যবহার করুন।
৫. ফসল সংগ্রহ:
প্রতি বস্তায় ১-৩ কেজি আদা উৎপাদিত হয়।
জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে আদা সংগ্রহ করা যায়।
পাতা হলুদ হয়ে শুকিয়ে গেলে আদা তুলুন, মাটি ঝেড়ে পরিষ্কার করে সংরক্ষণ করুন।
বস্তায় আদা চাষের সুবিধা-
কম জায়গায় বেশি উৎপাদন।
রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম।
সেচ ও সার প্রয়োগ সহজ।
পরিচর্যায় কম খরচ ও শ্রম।
বাড়ির ছাদ বা আঙ্গিনায় চাষের সুবিধা।
কিছু সতর্কতা-
বস্তার ছিদ্র বা ক্ষতি হলে মাটির উর্বরতা কমে যেতে পারে।
বৃষ্টির জল বস্তায় জমে থাকলে আদা পচে যেতে পারে।
বস্তা সংগ্রহ ও পরিবহনের খরচ কিছুটা বেশি হতে পারে।
উল্লেখিত পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনি সহজেই বস্তায় আদা চাষ করতে পারেন। আরও বিস্তারিত তথ্য বা সহায়তা যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে স্থানীয় কৃষি দফতর বা কৃষি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
No comments:
Post a Comment