লাইফস্টাইল ডেস্ক, ১৮ জুন ২০২৫: পিরিয়ড প্রতিটি মহিলার জীবনে একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু এই সময় একজন মহিলাকে অনেক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। সারা শরীরে ব্যথা, পেটে-কোমরে যন্ত্রণা, খিঁচুনি, পা ফোলা বিভিন্ন ধরণের সমস্যা তাঁদের ঘিরে ধরে। শরীর দুর্বল হয়ে যায়। কিন্তু প্রশ্ন হল, কেন এমন হয়? এই শরীর দুর্বল অনুভূতির পেছনে বেশ কিছু শারীরবৃত্তীয় ও হরমোনাল কারণ রয়েছে। আসুন এই সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক -
১. রক্তস্রাব ও আয়রনের ঘাটতি
পিরিয়ডের সময় রক্তপাতের মাধ্যমে শরীর আয়রন হারায়। আয়রন হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়তা করে, যা রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন পরিবহন করে। আয়রন ঘাটতি হলে অ্যানিমিয়া (রক্তাল্পতা) হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি, দুর্বলতা ও মাথা ঘোরা অনুভূতি হয়।
২. হরমোনাল পরিবর্তন
পিরিয়ডের আগে ও সময়ের মধ্যে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে যায়। এই হরমোনাল পরিবর্তন শরীরের শক্তি স্তর কমিয়ে দেয় এবং ক্লান্তি বাড়ায়।
৩. সেরোটোনিনের ঘাটতি
ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার সাথে সাথে সেরোটোনিন নামক নিউরোট্রান্সমিটারও কমে যায়। সেরোটোনিনের ঘাটতি ক্লান্তি ও মনমরা ভাব সৃষ্টি করতে পারে।
৪. ব্যথা ও অস্বস্তি
পিরিয়ডের সময় পেটের ব্যথা ও অস্বস্তি শরীরের শক্তি কমিয়ে দেয়। এই ব্যথা ও অস্বস্তি শরীরের অতিরিক্ত উর্জা খরচ করে এবং ক্লান্তি বাড়ায়।
৫. ঘুমের ব্যাঘাত
পিরিয়ডের সময় ব্যথা, অস্বস্তি ও মানসিক চাপের কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। ঘুমের অভাব ক্লান্তি ও দুর্বলতা বাড়াতে পারে।
৬. অতিরিক্ত চিনি ও প্রসেসড খাবার
পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত চিনি ও প্রসেসড খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা ওঠানামা করে, যা ক্লান্তি ও দুর্বলতা সৃষ্টি করতে পারে।
দুর্বলতা কাটাতে কী করা উচিৎ?
আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যেমন শাকসবজি, মাংস, ডিম ও খেজুর খান।
প্রয়োজনে আয়রন সাপ্লিমেন্ট নিন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নিন।
হালকা ব্যায়াম করুন, যেমন হাঁটা বা যোগব্যায়াম।
চিনি ও প্রসেসড খাবার কমিয়ে দিন।
পর্যাপ্ত জল পান করুন।
আর হ্যাঁ, পিরিয়ডের সময় যদি অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বলতা অনুভব করেন, তাহলে দেরি না করে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নিন।
No comments:
Post a Comment