ন্যাশনাল ডেস্ক, ২৭ জুন ২০২৫: পা বাঁধা অবস্থায় এক যুবকের পচা-গলা মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য। ঘটনাটি ঘটেছে পাঞ্জাবের লুধিয়ানায়। নীল রঙের একটি ড্রামে মৃতদেহটি পাওয়া গেছে। তবে, মৃত ব্যক্তি কে এবং তার মৃত্যুর কারণ কী তা এখনও স্পষ্ট নয়। প্রসঙ্গত, উত্তর প্রদেশের মিরাটেও একই রকম ঘটনা ঘটেছিল, যেখানে নীল রঙের ড্রামে সৌরভ রাজপুত নামে এক যুবকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। খুনের অভিযোগে মৃতের স্ত্রী মুসকান রাস্তোগি এবং তাঊপ্রেমিক সাহিল শুক্লাকে গ্ৰেফতার করা হয়।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন অনুসারে, লুধিয়ানার শেরপুর এলাকায় উদ্ধার মৃত যুবকের গলা এবং পা দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল। মৃতদেহটি একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে মোড়ানো ছিল। তীব্র গন্ধ আসার পর স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। এর পরেই মৃতদেহটি পাওয়া যায়। উক্ত সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলতে গিয়ে, এসএইচও কুলবন্ত কৌর বলেন, মৃত যুবক একজন অভিবাসী বলে মনে হচ্ছে। বর্তমানে মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কৌর বলেন, 'মুখের বৈশিষ্ট্য দেখেমনে হচ্ছে যুবকটি একজন অভিবাসী। এখনও পর্যন্ত তাঁর শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি, তবে মৃতদেহের অবস্থা খুবই খারাপ। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই জানা যাবে কোন পরিস্থিতিতে মৃত্যু হয়েছে।" পুলিশ সূত্র সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছে, 'এটাও সন্দেহ করা হচ্ছে যে ড্রামটি খুনের কিছু সময় আগে কেনা হয়েছিল।'
প্রতিবেদন অনুসারে, তদন্তকারী আধিকারিকরা লুধিয়ানায় ৪২টি ড্রাম তৈরির ইউনিট চিহ্নিত করেছেন। যে ড্রামে মৃতদেহটি পাওয়া গেছে তা নতুন বলে মনে হচ্ছে। এছাড়াও, পুলিশ ঘটনাস্থলের আশেপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ স্ক্যান করা শুরু করেছে। রেল স্টেশন, বাস স্ট্যান্ড এবং শহরের অন্যান্য স্থানে স্থাপিত ক্যামেরা থেকেও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সন্দেহজনক যানবাহনের ওপরেও পুলিশ নজর রাখছে।
প্রসঙ্গত, ব্রহ্মপুরী থানা এলাকার ইন্দিরানগরের বাসিন্দা মুসকান রাস্তোগি তার প্রেমিক সাহিল শুক্লার সাথে মিলে ৩ মার্চ তার স্বামী সৌরভ রাজপুতকে নৃশংস খুন করে। তারা দুজনেই মৃতদেহটি চার টুকরো করে একটি ড্রামে রেখে সিমেন্ট দিয়ে ভরে দেয়। ঘটনার পর, তারা দুজনেই হিমাচল প্রদেশে চলে যায়। পরে মুসকান তার পরিবারকে ঘটনাটি জানায়, এরপর পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ মুসকান এবং সাহিলকে গ্রেফতার করে ১৯ মার্চ আদালতে হাজির করে, যেখান থেকে তাদের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়।
২০১৬ সালে সৌরভ এবং মুসকানের প্রেমের বিয়ে হয়, যার পরিবার বিরোধিতা করেছিল। ২০১৯ সালে তাদের দুজনেরই একটি কন্যা সন্তান হয়। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আর্থিক অবস্থার অবনতির কারণে সৌরভের পরিবারের সাথে বিরোধ হয় এবং তিনি ইন্দিরানগরে থাকতে শুরু করেন। এই সময়ে মুসকান এবং সাহিলের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পিটিআই অনুসারে, পুলিশের মতে, সৌরভ ২০২১ সালে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেছিলেন, কিন্তু কন্যা সন্তানের কারণে মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে টানাপোড়েন অব্যাহত ছিল এবং ৩ মার্চ সৌরভকে খুন করা হয়।
No comments:
Post a Comment