তোলা না পেয়ে বাড়ি ভাংচুর-মারধর! তৃণমূল ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে নালিশ

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ১৫ জুন ২০২৫: তোলাবাজির অভিযোগ উঠল তৃণমূলের ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার কালিয়াচকে। এখানকার ১নং ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সারিউল শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, সভাপতির তোলাবাজির প্রতিবাদ করায় পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিবাদীদের বাড়ি ভাঙচুর, মহিলাদের মারধর। আগ্নেয়াস্ত্র হাতে সভাপতির অনুগামী দুষ্কৃতীদের দাপাদাপি এলাকায়। সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল। নিরাপত্তার দাবী তুলে পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ আক্রান্ত গ্রামবাসীরা। যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনও নিশ্চুপ জেলার পুলিশকর্তারা।

এলাকা দখল নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে মালদার কালিয়াচক থানার দক্ষিণ লক্ষ্মীপুর এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ চলছিল। কালিয়াচক ১নং ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সারিউল শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর শ্বশুড়বাড়ির সদস্যদের এলাকার দায়িত্বভার তুলে দিচ্ছেন। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতির শ্বশুড়বাড়ির সদস্যরা কংগ্রেস করেন আর এই নিয়েই বিবাদ শুরু হয়। এই ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতির দাবী করেন পাঁচ লক্ষ টাকা। তা দিতে অস্বীকার করেন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা বরং বিষয়টি তারা জেলা নেতৃত্বকে অভিযোগ করেন। রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনও বিষয়টি জানেন। এলাকার বিধায়ক আব্দুল গনিও রাজ্য নেতৃত্বকে জানান কংগ্রেস দলের নেতা কর্মীদের সাথে হাত মিলিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি সারিউল শেখ। 

অভিযোগ, এরপরই এলাকায় দুষ্কৃতীদের নিয়ে তাণ্ডব চালায় তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি সারিউল শেখ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঘটনার সময় নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল পুলিশ। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দুষ্কৃতীদের দাপাদাপির পরও কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পুলিশ। সমাজ মাধ্যমে দুষ্কৃতীদের ছবি প্রকাশ্যে আসলেও অধরা দুষ্কৃতীরা। আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী। তাই পুরো ঘটনা জানিয়ে পুলিশ সুপারকে লিখিত অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসীরা। তবুও নীবর পুলিশকর্তারা।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতির। তাঁর সাফাই গ্রামবাসীরা মিথ্যে বলছেন। প্রশাসন বিষয়টি দেখছে। এই ঘটনার পিছনে বিরোধীদের চক্রান্ত রয়েছে বলেও দাবী করেন তিনি। এই বিষয়ে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি, শুভময় বোস বলেন, যারা এই ধরনের লুটপাট বা বিবাদ চালাচ্ছে তা সে বিরোধী হোক বা দলের পুলিশকে বলব উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে। 

অন্যদিকে বিষয়টা নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির দক্ষিণ মালদার সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ির কথায়, 'জেলার আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে, একের পর এক ঘটনা ঘটলেও পুলিশ চুপ। তৃণমূল করে বলে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ।'