ন্যাশনাল ডেস্ক: ঘুমন্ত স্বামীর ওপর লঙ্কার গুঁড়ো মেশানো জল ঢেলে দিলেন স্ত্রী! এমনই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য। দিল্লীর তিস হাজারী আদালতে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে। অভিযোগ ওই মহিলা রাগে তার স্বামীর সঙ্গে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে। নতুন বছরের প্রথম দিনে অর্থাৎ ০১ জানুয়ারী ২০২৫, দিল্লির নাংলোই এলাকায় এই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটে। সম্প্রতি এই মামলার শুনানি হয় আদালতে।
জ্যোতি, যিনি 'কিট্টু' নামেও পরিচিত, তার স্বামীর সাথে ঘরেই ছিলেন। অভিযোগ, জ্যোতি তার স্বামীর মুখে-বুকে লঙ্কা গুঁড়ো মিশ্রিত ফুটন্ত জল ঢেলে দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, আরও অভিযোগ, জ্যোতি তার স্বামীকে বলেছিলেন, "তোকে তো প্রাণে মেরে ফেলতেই হবে।" এই কথা শুনে স্বামী হকচকিয়ে যান এবং যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন।
এরপরে জ্যোতি আরও ভয়ঙ্কর পদক্ষেপ করেন। তিনি ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেন এবং তার স্বামীর মোবাইল ফোনটি নিয়ে পালিয়ে যান যাতে তিনি কারও কাছে সাহায্য চাইতে না পারেন। অসহ্য যন্ত্রণায় কাতর স্বামী সাহস করে জানালা ভেঙে বারান্দায় পৌঁছে সাহায্যের জন্য জোরে-জোরে চিৎকার করতে থাকেন। তাঁর আওয়াজ শুনে বাড়িওয়ালা বিকাশ সেখানে পৌঁছে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। ডাক্তাররা জানিয়েছেন যে, স্বামীর আঘাত সামান্য।
ঘটনার পর, জ্যোতির বিরুদ্ধে নাংলোই থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং শীঘ্রই চার্জশিট দাখিল করে। মামলাটি তিস হাজারী আদালতে পৌঁছায়, যেখানে অতিরিক্ত দায়রা জজ (এএসজে) সৌরভ কুলশ্রেষ্ঠ এই মামলার শুনানি করেন।
জ্যোতির আইনজীবী আদালতে যুক্তি দেন যে, জ্যোতিকে মিথ্যাভাবে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি জানান যে, জ্যোতি নিজেই তাঁর স্বামীর কাছ থেকে পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন এবং তিনি ২০২৪ সালের ১৯ নভেম্বর তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। আইনজীবী আরও বলেন, জ্যোতির জীবন সহজ ছিল না, তাঁর প্রথম বিয়ে ভেঙে গেছে এবং তাঁর একটি মেয়েও রয়েছে।
অন্যদিকে, স্বামীর আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করে বলেন যে, জ্যোতি তাঁর প্রথম বিয়ে এবং মেয়ের বিষয়টি তিনি তাঁর স্বামীর কাছ থেকে গোপন করেছিলেন, যা তাঁদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বড় বিশ্বাসঘাতকতা। স্বামীর আইনজীবী আদালতকে বলেন যে, জ্যোতির আচরণ বিপজ্জনক এবং তাঁকে জামিন দেওয়া ভুক্তভোগী ও সাক্ষীদের বিপদে ফেলতে পারে।
৯ জুলাই, ২০২৫- দুই পক্ষের যুক্তি শোনার পর, আদালত ৩০,০০০ টাকার চালানে জ্যোতিকে নিয়মিত জামিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বিচারক সৌরভ কুলশ্রেষ্ঠ বলেন, মামলার পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং জ্যোতি যাতে ভুক্তভোগী বা সাক্ষীদের ক্ষতি না করেন তা নিশ্চিত করে তাঁকে জামিন দেওয়া যেতে পারে। ভবিষ্যতে যাতে কোনও ভুল পদক্ষেপ না করা হয়, সেজন্য আদালত কঠোর শর্ত আরোপ করেছে।
No comments:
Post a Comment