হলুদ গাছ: কেবল রান্নাঘরের মসলা নয়, প্রকৃতপক্ষে ওষুধের ভাণ্ডার - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Saturday, August 16, 2025

হলুদ গাছ: কেবল রান্নাঘরের মসলা নয়, প্রকৃতপক্ষে ওষুধের ভাণ্ডার


 হলুদ গাছ আমাদের ঘরের একেবারেই পরিচিত নাম। রান্নার স্বাদ ও রঙ বাড়াতে আমরা প্রতিদিনই হলুদ ব্যবহার করি। কিন্তু এই সোনালি মসলার ঔষধি গুণের কথা অনেকেই জানেন না। প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদ, গ্রাম্য চিকিৎসা ও ইউনানি শাস্ত্রে হলুদকে ‘অমৃত ভেষজ’ বলা হয়ে আসছে।

হলুদের মূল অংশ, যাকে রাইজোম বলা হয়, তাতে রয়েছে কারকিউমিন নামক সক্রিয় উপাদান। গবেষণায় প্রমাণিত, কারকিউমিন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি হিসেবে কাজ করে। তাই শরীরের ছোটোখাটো ক্ষত, কাটা-ছেঁড়া, ফোঁড়া বা চর্মরোগের ক্ষেত্রে হলুদের লেপ লাগালে দ্রুত আরোগ্য হয়।

আয়ুর্বেদে বলা হয়েছে, নিয়মিত অল্প পরিমাণে হলুদ খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পায়। শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশি বা গলা ব্যথায় হলুদ দুধে মিশিয়ে খেলে চমৎকার ফল মেলে। জয়েন্টে ব্যথা বা আর্থ্রাইটিসে ভুগছেন যারা, তাঁদের জন্যও হলুদ অত্যন্ত কার্যকর। কারকিউমিন প্রদাহ কমিয়ে হাড়ের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

ত্বক পরিচর্যায়ও হলুদের ব্যবহার সুপ্রাচীন। বিয়ের আগে কনে ও বরকে ‘হলুদ অনুষ্ঠান’-এ মাখানো হয় ত্বক উজ্জ্বল ও সুস্থ রাখার জন্য। ব্রণ, কালো দাগ বা ত্বকের প্রদাহ কমাতে এখনও অনেকেই হলুদ ব্যবহার করেন। আধুনিক প্রসাধনী শিল্পেও হলুদের নির্যাস ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন ক্রিম ও ফেসপ্যাকে।

আধুনিক বিজ্ঞানীদের মতে, হলুদ লিভার ও হৃদযন্ত্রের জন্যও উপকারী। শরীরের টক্সিন দূর করতে এবং হজম শক্তি বাড়াতে এটি সহায়ক। এমনকি সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, কারকিউমিন ক্যান্সার প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখতে পারে।

তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, অতিরিক্ত হলুদ খেলে লিভারের ক্ষতি হতে পারে। তাই সঠিক মাত্রায় ও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হলুদ ব্যবহার করাই শ্রেয়।

 রান্নার স্বাদ বাড়ানো ছাড়াও হলুদ আমাদের সুস্থতা রক্ষায় এক অপরিহার্য ভেষজ। তাই ঘরের এই সাধারণ গাছ আসলে প্রকৃতির অমূল্য দান।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad