অসমের নগাঁও জেলায় ফেরি করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন মুর্শিদাবাদের তিন শ্রমিক। বাংলায় কথা বলতে শুনে তাঁদের বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে পুলিশ। আধার ও ভোটার কার্ডসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখানো সত্ত্বেও পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। অভিযোগ, এরপর সরাসরি তাঁদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
ধৃত শ্রমিকরা হলেন শক্তিপুর থানার সোমপাড়ার নজরুল ইসলাম, একই এলাকার সানাউর মল্লিক এবং বেলডাঙার বাসিন্দা জাহির শেখ। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২২ অগস্ট।
পরিবার ও সহকর্মীদের দাবি, তিন জনকে মুক্ত করার শর্তে দেড় লক্ষ টাকা দাবি করেছিল পুলিশ। পরে বিষয়টি মুর্শিদাবাদের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে রাজ্যসভার সাংসদ ও পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলামের কাছে পৌঁছায়। তিনি জানান, রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ শুরু করেছে এবং অসম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আইনি সহায়তার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। রাজ্য সরকার বলছে, দেশের মধ্যে এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে গিয়ে কাজ করলেও বাংলার শ্রমিকদের বাংলাদেশি বলে অপবাদ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আগামী সোমবার শুরু হতে চলা বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে এই ইস্যুতে প্রস্তাব আনার পরিকল্পনা রয়েছে তৃণমূলের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ বিষয়ে বক্তব্য রাখবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে আটক শ্রমিকদের পরিবার চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে। সংসারের মূল উপার্জনকারীকে হারিয়ে তাঁদের জীবন প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। দ্রুত মুক্তি ও নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের দাবি তুলেছেন তাঁরা।
রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, অসমে বিজেপি সরকারের অধীনে বাংলার শ্রমিকদের উপর ধারাবাহিকভাবে বাঙালি বিরোধী মনোভাব দেখানো হচ্ছে। মুর্শিদাবাদের লালগোলার তৃণমূল বিধায়ক মহম্মদ আলির মতে, সাম্প্রতিক ঘটনাই সেই অভিযোগের প্রমাণ।
No comments:
Post a Comment