চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ি সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫ থেকে দুই দিনের ভারত সফরে দিল্লি আসছেন। এই সফরের সময়, ওয়াং ইয়ি মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে দেখা করবেন। ভারত-চীন সম্পর্কের উন্নতির মধ্যে এই বৈঠকটি হচ্ছে। ভারত ও চীনের মধ্যে LAC নিয়ে বিরোধ থাকলেও, গত বছর G20 শীর্ষ সম্মেলনে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং চীনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের দেখা হয়েছিল। এরপর, কাজানে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে দুই দেশের নেতাদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু হয়।
ভারত-চীন সম্পর্কের উন্নতির নতুন সূচনা
এটি চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দ্বিতীয় ভারত সফর। এর আগে তিনি ২০২২ সালের মার্চ মাসে ভারত সফর করেছিলেন। এবার ওয়াং ই তার তিন দিনের সফরে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সাথে ২৪তম ভারত-চীন সীমান্ত আলোচনায় অংশ নেবেন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বেইজিংয়ে এই সংলাপ হয়েছিল। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরে ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালে গালওয়ান সংঘাতের পর, দুই দেশের সম্পর্ককে আবার সঠিক পথে আনার প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে। এই বছর কৈলাস মানস সরোবর যাত্রা পুনরায় শুরু করা হয়েছে এবং চীনা পর্যটকদের ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, করোনা মহামারীর কারণে আগে বন্ধ থাকা দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান ভ্রমণও শীঘ্রই শুরু হতে চলেছে।
এই সফরকে একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, কারণ অন্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করা খুবই বিরল। এছাড়াও, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধের মধ্যে ভারত ও চীনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতাও গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে।
এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে মোদীর অংশগ্রহণ
ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এই বছর সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) সভায় যোগ দিতে চীন সফর করেছেন। এখন, এই মাসে ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, চীন এসসিও শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করবে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও যোগ দেবেন। ২০২০ সালে গালওয়ান সংঘর্ষের পর ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ এবং দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে গত কয়েক মাসে, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নত করার দিকে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এখন, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে।
সীমান্ত ও বাণিজ্য আলোচনা
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে দেখা করার আগে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সাথে পৃথকভাবে আলোচনা করবেন। সীমান্ত পরিস্থিতি, বাণিজ্য এবং বিমান বিমান পরিষেবা পুনরুদ্ধারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি এই আলোচনায় আলোচনা করা যেতে পারে। এই সফরকে ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যা ২০২০ সালে গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর টানাপোড়েন তৈরি করেছিল।
No comments:
Post a Comment