মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের মাধ্যমে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধকে থামানোর একটি কৌশল অবলম্বন করেছেন বলে সম্প্রতি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জানিয়েছেন।
ভ্যান্স এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসন রাশিয়ার অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করার জন্য এই পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশেষ করে ভারত থেকে রাশিয়ার তেল আমদানি সীমিত করার মাধ্যমে রাশিয়ার তেল অর্থনীতিকে প্রভাবিত করা হয়েছে। এর ফলে তারা ইউক্রেনে আগ্রাসন চালিয়ে যেতে পারবে না।”
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমি দেশগুলো রাশিয়ার বাণিজ্য ও তেলের ওপর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এ সময়ে ভারত রাশিয়া থেকে তেলের আমদানি বাড়িয়েছে। বর্তমানে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ এবং মোট আমদানের প্রায় ৩০ শতাংশ আসে রাশিয়া থেকে।
ভ্যান্সের মন্তব্য অনুযায়ী, ভারতের এই আমদানি রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে। তাই ট্রাম্প প্রশাসন এই পদক্ষেপকে একটি অর্থনৈতিক চাপের উপায় হিসেবে ব্যবহার করেছে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাণিজ্য নীতি স্থির করা হয়েছে দেশের জাতীয় স্বার্থ এবং আন্তর্জাতিক বাজারের পরিস্থিতি বিবেচনা করে। নয়াদিল্লি স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, তারা নিজেদের সার্বভৌমত্বের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ মেনে নেবে না।
এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও বাণিজ্যনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এটি শুধু ভারত-আমেরিকা সম্পর্ককেই প্রভাবিত করছে না, বরং রাশিয়া, ইউক্রেন এবং ইউরোপীয় বাজারের ওপরও তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলছে। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ইউক্রেনে যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি আলাস্কায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন। তবে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুতিন-জেলেনস্কির বৈঠকের সম্ভাবনা বর্তমানে নেই।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, তেল বাজার এবং ভূ-রাজনীতিতে জটিলতা আরও বৃদ্ধি করেছে। ভারতীয় বাণিজ্য নীতি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পশ্চিমি বিশ্বের চাপ—এই তিনের সমন্বয় এখন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
No comments:
Post a Comment