খাওয়ার পরই স্নান কতটা ঠিক! কী বলছে আয়ুর্বেদ, জেনে নিন শরীরের ওপর এর প্রভাব - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday, August 6, 2025

খাওয়ার পরই স্নান কতটা ঠিক! কী বলছে আয়ুর্বেদ, জেনে নিন শরীরের ওপর এর প্রভাব



প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ০৬ আগস্ট ২০২৫, ১০:০০:০১ : প্রায়শই মানুষ স্নানের পর খাবার খায়, কিন্তু অনেক সময় ব্যস্ততার কারণে মানুষের রুটিন নষ্ট হয়ে যায়। কিছু মানুষ প্রথমে খাবার খায় এবং তারপর স্নান করতে যায়। বর্ষাকালে আর্দ্রতা বেশি থাকে, যার কারণে মানুষ খাবার খাওয়ার পরপরই স্নান করতে পছন্দ করে। তবে, আয়ুর্বেদ খাবারের পরপরই স্নান করতে নিষেধ করে। শুধু তাই নয়, বিজ্ঞানও খাবারের পরপরই স্নানকে সঠিক বলে মনে করে না। এখন প্রশ্ন হল, খাওয়ার পরপরই স্নানের শরীরে কী প্রভাব পড়ে? আসুন এই সম্পর্কে বাস্তবতা জানার চেষ্টা করি।

আয়ুর্বেদ অনুসারে, আমাদের শরীরে একটি গ্যাস্ট্রিক অগ্নি থাকে, যাকে বলা হয় পাচক অগ্নি। এই অগ্নি খাদ্য হজমে সাহায্য করে। আমরা যখন খাবার খাই, তখন শরীরের রক্তপ্রবাহ অন্ত্র এবং পাকস্থলীর দিকে চলে যায়, যাতে খাবার সঠিকভাবে হজম হয়। তবে, খাওয়ার পরপরই স্নান করলে এই রক্তপ্রবাহ ত্বকের দিকে চলে যায়। এর ফলে, গ্যাস্ট্রিক অগ্নি দুর্বল হয়ে যায় এবং খাবার সঠিকভাবে হজম হয় না। এর ফলে গ্যাস, বদহজম এবং অন্যান্য পেটের সমস্যা হতে পারে।

আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের মতে, খাবার খাওয়ার পরপরই ঠান্ডা জল দিয়ে স্নান করা বেশি ক্ষতিকর। এর ফলে শরীরের বাহ্যিক তাপমাত্রা দ্রুত কমে যায়। এর ফলে শরীরের শক্তির একটা বড় অংশ তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষায় ব্যবহৃত হয়, যা হজম প্রক্রিয়ার উপর প্রভাব ফেলে। আয়ুর্বেদে বলা হয়েছে যে, খাবার খাওয়ার পর শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পায় যাতে হজম ঠিকমতো হয়। স্নান করলে এই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া বন্ধ হয় এবং খাবার হজম হতে বেশি সময় লাগে।

খাওয়ার পরপরই স্নান করলে শরীরে ভারী ভাব, গ্যাস তৈরি, পেট ফাঁপা এবং অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা দেখা দেয়। হজম অসম্পূর্ণ থাকলে খাবার অন্ত্রে পচতে শুরু করে এবং বিষাক্ত পদার্থ তৈরি হয়। আয়ুর্বেদে একে আম বলা হয়। এই আম শরীরের অনেক রোগের মূলে পরিণত হয়। খাবার খাওয়ার পর শরীরকে বিশ্রামের প্রয়োজন হয় যাতে খাবার হজমের প্রক্রিয়ায় পুরোপুরি নিয়োজিত হতে পারে, কিন্তু স্নান করলে শরীরের শক্তি দুটি ভাগে বিভক্ত হয়। একদিকে শরীর হজমের জন্য শক্তি ব্যবহার করে, অন্যদিকে তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষা করে। এর ফলে শরীর ক্লান্ত বোধ করে, ঘুমাতে শুরু করে অথবা কাজ করার ইচ্ছা থাকে না। এই হজম শক্তি হ্রাস পেতে পারে শরীরের কর্মক্ষমতা।


আয়ুর্বেদচার্যদের মতে, খাওয়ার কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট পর স্নান করা উচিত। এই সময়ে হালকা হাঁটা, ধ্যান বা বিশ্রাম উপকারী। এটি কেবল হজমশক্তি উন্নত করে না, বরং স্নানের আরও সুবিধা দেয়। যদি আপনি সকালের খাবার পরে স্নান করেন, তাহলে নাস্তা হালকা হওয়া উচিত এবং স্নানে গরম জল ব্যবহার করা নিরাপদ বলে মনে করা হয়। খাবারের পরপরই স্নান শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে। মানুষের এটি করা এড়ানো উচিত।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad