প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ২০ আগস্ট ২০২৫, ০৯:০০:০১ : হিন্দু ধর্মে পিতৃ পক্ষের (শ্রাদ্ধ পক্ষ) আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। প্রতিবছর ভাদ্রপদ পূর্ণিমার পর থেকে আশ্বিন আমাবস্যা পর্যন্ত এই সময়কাল পালন করা হয়। এটি মূলত পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে নিবেদিত একটি বিশেষ পর্ব। বিশ্বাস করা হয়, এই সময়ে পিতৃলোক থেকে পূর্বপুরুষেরা পৃথিবীতে নেমে আসেন এবং ভক্তিপূর্ণ শ্রাদ্ধ, দান ও সেবার মাধ্যমে সন্তুষ্ট হয়ে পরিবারের জন্য আশীর্বাদ প্রদান করেন।
শাস্ত্র মতে, এই সময় শুধুমাত্র পূজা-পাঠ নয়, বরং পূর্বপুরুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সুযোগ। মানুষ তর্পন করে, ব্রাহ্মণদের অন্নদান করে এবং বিশেষ কিছু প্রাণীকেও আহার করানো হয়। এগুলি প্রতীকীভাবে পিতৃলোকের সঙ্গে যুক্ত বলে ধরা হয়।
ঋষিকেশের পুরোহিত শুভম তিওয়ারি স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “পিতৃ পক্ষ শুধুই কোনো ধর্মীয় আচার নয়, এটি আমাদের সমাজে করুণা, দয়া এবং সেবার মানসিকতা জাগ্রত করার এক পবিত্র সময়। এই সময়ে গরু, কাক, কুকুর ও পিঁপড়েকে খাদ্যদান করলে পিতৃগণ সন্তুষ্ট হন এবং পরিবারে শান্তি, সমৃদ্ধি ও সুখ প্রতিষ্ঠিত হয়।”
গরুকে অন্নদান
হিন্দু ধর্মে গরুকে ‘মাতা’ বলা হয়। পিতৃ পক্ষের সময়ে গরুকে সবুজ ঘাস, আটা বা গুড় খাওয়ানো বিশেষ শুভ বলে মানা হয়। বিশ্বাস, এতে পিতৃদোষ হ্রাস পায় এবং ঘরে ধন-সম্পদের বৃদ্ধি ঘটে।
কাককে অন্নদান
কাককে পিতৃলোকের প্রতীক ধরা হয়। কাক যদি আহার গ্রহণ করে তবে তা পূর্বপুরুষ তুষ্ট হওয়ার ইঙ্গিত। ভাত, রুটি ও মিষ্টি খাওয়ানোকে সবচেয়ে শুভ মনে করা হয়।
কুকুরকে অন্নদান
কুকুরকে ধর্ম ও রক্ষাকর্তার প্রতীক বলা হয়। পিতৃ পক্ষের সময়ে কুকুরকে রুটি, দুধ বা গুড় খাওয়ালে জীবনের বাধা-বিপত্তি দূর হয় এবং ঘরে বিশ্বস্ততা ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি পায়।
পিঁপড়েকে অন্নদান
ক্ষুদ্র হলেও পিঁপড়েকে আটা বা চিনি খাওয়ানোর মাহাত্ম্য অনেক। এটি পুণ্যদান হিসেবে ধরা হয় এবং বিশ্বাস, এতে ঘর থেকে দারিদ্র্য ও রোগ-ব্যাধি দূর হয়।
পিতৃ দোষের প্রভাব
যাদের জন্মকুণ্ডলীতে পিতৃ দোষ থাকে, তারা জীবনে নানা বাধা ও সমস্যার সম্মুখীন হন। জ্যোতিষীরা পরামর্শ দেন— পিতৃ পক্ষের সময়ে প্রাণীদের খাদ্যদান করলে পিতৃ দোষের প্রভাব হ্রাস পায় এবং জীবনে ইতিবাচক শক্তির সঞ্চার ঘটে।
No comments:
Post a Comment