ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ২৫ আগস্ট ২০২৫: ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এই নতুন শুল্ক ২৭শে আগস্ট, ২০২৫ তারিখ রাত ১২:০১ (EST) থেকে কার্যকর হবে। অর্থাৎ, এটি এখন থেকে ৩০ ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে কার্যকর হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে, রাশিয়া থেকে তেল কেনার প্রতিক্রিয়ায় তারা এই পদক্ষেপ করেছে।
ট্রাম্প প্রশাসন বলছে যে, রাশিয়া থেকে তেল কিনে ভারত পরোক্ষভাবে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য মস্কোকে অর্থায়ন করছে। এই অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক ১ আগস্ট, ২০২৫ থেকে প্রযোজ্য ২৫ শতাংশ পারস্পরিক শুল্কের অতিরিক্ত হবে, যা ভারত থেকে আমদানি করা অনেক পণ্যের ওপর মোট শুল্ক ৫০ শতাংশে নিয়ে যাবে। এই হার ব্রাজিলের সমান এবং অন্যান্য এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলির তুলনায় অনেক বেশি।
তবে, ওষুধ, সেমিকন্ডাক্টর এবং জ্বালানি সম্পদের মতো কিছু ক্ষেত্র এই শুল্ক থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত। এই শুল্ক ভারতের ৮৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন রপ্তানির ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে, যা দেশের জিডিপির ২.৫ শতাংশ। বস্ত্র, রত্ন ও অলংকার, চামড়া, সামুদ্রিক পণ্য, রাসায়নিক এবং অটো যন্ত্রাংশের মতো খাতগুলি বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমেরিকার আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্ককে অনুচিত ও অন্যায্য বলে অভিহিত করেছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, ভারত তার জ্বালানি চাহিদা এবং জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করছে, যা আমেরিকা আগে বিশ্ব জ্বালানি বাজারের স্থিতিশীলতার জন্য উৎসাহিত করেছিল। ভারত সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঝপর তাৎক্ষণিক প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপের পরিবর্তে কূটনৈতিক আলোচনা এবং রপ্তানিকারকদের জন্য প্রণোদনার মতো ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বিবেচনা করছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ মার্কিন শুল্ক আরোপের আগে তাঁর কঠোর অবস্থান বজায় রেখে সোমবার বলেছেন যে, ওয়াশিংটনের অর্থনৈতিক চাপ নির্বিশেষে তাঁর সরকার একটি উপায় খুঁজে বের করবে। আহমেদাবাদে এক জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'যত চাপই আসুক না কেন, আমরা তা মোকাবেলা করার জন্য আমাদের শক্তি বৃদ্ধি করে যাব। আজ আত্মনির্ভর ভারত অভিযান গুজরাট থেকে প্রচুর জ্বালানি পাচ্ছে এবং এর পিছনে দুই দশকের কঠোর পরিশ্রম রয়েছে।'
তিনি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেছেন যে, ভারত এই ধরণের চাপের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াবে এবং তাঁর নাগরিকদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবে। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'আজ আমরা সকলেই বিশ্বে অর্থনৈতিক স্বার্থের ওপর ভিত্তি করে নীতিমালা দেখতে পাচ্ছি। গান্ধীর ভূমি থেকে, আমি দেশবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, মোদীর জন্য আপনাদের স্বার্থ সর্বাগ্রে। আমার সরকার কখনও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, পশুপালক বা কৃষকদের কোনও ক্ষতি করতে দেবে না। ভারতের কৃষক, জেলে এবং পশুপালকদের সাথে সম্পর্কিত যে কোনও ক্ষতিকারক নীতির বিরুদ্ধে মোদী প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে আছেন। আমরা আমাদের কৃষক, পশুপালক এবং জেলেদের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনও ধরণের আপস মেনে নেব না।'
No comments:
Post a Comment