আমাদের মধ্যে অনেকেই সকালের চায়ের সাথে সামান্য গুড় খেতে ভালোবাসি, কিংবা চায়ে গুড় মিশিয়ে পান করি। আমরা মনে করি এটি প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যকর। কিন্তু আয়ুর্বেদ অনুযায়ী, চা ও গুড় একসাথে খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
আয়ুর্বেদ কী বলছে?
আয়ুর্বেদের মতে, চা এবং গুড় হলো “বিরুদ্ধ আহার” বা অসঙ্গত খাদ্যসংমিশ্রণ। অর্থাৎ, তাদের রাসায়নিক প্রকৃতি একে অপরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যখন এই দুই উপাদান একসাথে শরীরে প্রবেশ করে, তখন তা পাচন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে এবং ধীরে ধীরে বিষক্রিয়ার মতো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
কী ধরনের সমস্যা হতে পারে
প্রাথমিকভাবে হয়তো আপনি হালকা গ্যাস, পেট ফেঁপে থাকা বা অ্যাসিডিটির মতো উপসর্গ অনুভব করবেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এই অভ্যাস চালিয়ে গেলে তা শরীরে লিভার, পেট ও কোলনের সমস্যা, এমনকি ক্যান্সারের মতো জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
কেন এমন হয়
চায়ে থাকা ট্যানিন ও ক্যাফেইন পাচন রসের ভারসাম্য নষ্ট করে।
গুড় শরীরে উষ্ণ প্রকৃতির, আর চা তুলনামূলকভাবে তিক্ত ও শুষ্ক প্রকৃতির।
এই বিপরীত প্রকৃতির কারণে পাচনতন্ত্রে অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া ঘটে।
আরও কিছু ভুল খাদ্য সংমিশ্রণ
আয়ুর্বেদ আরও কিছু খাদ্যসংমিশ্রণ এড়াতে বলে, যেমন –
দুধ ও আম একসাথে
মাছ ও দই
ফল ও ডাল
দুধ ও লবণ
এই সংমিশ্রণগুলো শরীরে একইভাবে টক্সিন সৃষ্টি করে ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল করতে পারে।
কী করবেন
যদি আপনি চায়ে মিষ্টতা চান, তাহলে গুড়ের পরিবর্তে মধু ব্যবহার করতে পারেন — তবে মধু কখনো গরম চায়ে মেশাবেন না, কারণ গরমে মধুর গুণ নষ্ট হয়।
সবচেয়ে ভালো হলো, চা এবং গুড় আলাদাভাবে খান — যেমন সকালে চা পান করার পর কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে গুড় খাওয়া যেতে পারে।
আয়ুর্বেদ বলে, সঠিক খাদ্যসংমিশ্রণই সুস্থতার চাবিকাঠি।
চা ও গুড় একসাথে খাওয়া যতই নিরীহ মনে হোক না কেন, দীর্ঘমেয়াদে এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই অভ্যাস পরিবর্তন করুন — ছোট ছোট সচেতনতা আপনার শরীরকে বড় বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে।
No comments:
Post a Comment