'ম্যাগির জন্য টাকা মেলেনি, দিদির সোনার আংটি বেঁচতে দোকানে ছুটল নাবালক! - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Monday, October 6, 2025

'ম্যাগির জন্য টাকা মেলেনি, দিদির সোনার আংটি বেঁচতে দোকানে ছুটল নাবালক!


ন্যাশনাল ডেস্ক, ০৬ অক্টোবর ২০২৫: ছোট হোক বা বড় ম্যাগি খেতে ভালোবাসেন না এমন মানুষ কমই চোখে পড়ে। কিন্তু কেউ ম্যাগি খাওয়ার জন্য সোনার আংটি বেঁচে দিতে পারে, এমন‌ কথা শুনেছেন? হ্যাঁ, অবাক লাগলেও এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে উত্তর প্রদেশের কানপুরে। ১৩ বছর বয়সী এক নাবালক শুধুমাত্র ম্যাগি খাওয়ার জন্য সোনার আংটি বেঁচতে পৌঁছে যায়। তবে, শেষ পর্যন্ত দোকানদারের বুদ্ধিমত্তায় ওই নাবালক কাজটি করতে ব্যর্থ হয়। 


ঘটনাটি ঘটেছে কাকাদেব থানা এলাকার শাস্ত্রী নগর এলাকায়। দোকানদারের ছেলেটির ওপর সন্দেহ হলে, তিনি তার পরিবারকে ফোন করেন। শিশুটি শাস্ত্রী নগর সরাফা বাজারের সভাপতি পুষ্পেন্দ্র জয়সওয়ালের কাছে পৌঁছে যায়। সে আংটি বিক্রি করার কথা বলতেই পুষ্পেন্দ্রের সন্দেহ হয়। তিনি শিশুটির কাছে তার ফোন নম্বর এবং বাড়ির ঠিকানা জানতে চান। এরপর দোকানদার শিশুটির মাকে দোকানে ডেকে আংটিটি দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। শিশুটির মা ঘাবড়ে যান। তিনি বলেন যে, এই আংটিটি তাঁর মেয়ের এনগেজমেন্টের আংটি, যার কয়েক দিনের মধ্যেই বিয়ে হতে চলেছে। কেউ যদি এই আংটিটি কিনে নিতেন, তাহলে এনগেজমেন্ট ভেঙে যেতে পারত।


সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ছেলেটির বোনের বিয়ের অনুষ্ঠান ঠিক হয়ে গিয়েছিল এবং বাড়িতে প্রস্তুতি চলছিল। ছেলেটি গোপনে বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য কেনা আংটিটি নিয়ে দোকানে বিক্রি করতে যায়। খবর অনুযায়ী, ঘটনাটি গত বুধবারের। দোকানদার যখন তাকে জিজ্ঞাসা করে যে সে আংটিটি কোথা থেকে পেয়েছে, তখন সে স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেনি। ছেলেটির আচরণ দেখে দোকানদারের সন্দেহ হয় এবং তিনি তৎক্ষণাৎ তাঁর বাড়িতে ফোন করেন। পরিবারের সদস্য দোকানে পৌঁছালে চাঞ্চল্যকর সত্য সামনে আসে। 


দোকানদার শিশুটির মাকে পুরো ঘটনাটি জানান। তিনি বলেন, 'শিশুটি ম্যাগির জন্য টাকা জোগাড় করতে বাড়ি থেকে আংটিটি নিয়ে এসেছিল। আপনি ম্যাগি খাওয়ার জন্য টাকা দেননি তাই শিশুটি আংটি বেঁচতে আসে।' আর একথা শুনে শিশুটির মায়ের চোখ জলে ভরে আসে। 


পুষ্পেন্দ্র জয়সওয়াল বলেন, 'শিশুটি আমাকে বলে যে, ম্যাগি খাওয়ার জন্য টাকা জোগাড় করতে হবে তাই এটি বিক্রি করতে এসেছি। তখনই আমার সন্দেহ হয় না জানিয়েই এটি এনেছে।' শিশুটির সরলতা দেখে দোকানদার আংটিটি ফিরিয়ে দেয়। তিনি বলেন তাঁর বাজারে এমন কখনও হয় না যে কোনও শিশুর আনা জিনিস পরীক্ষা না করেই কেনা হয়।


পুষ্পেন্দ্র জয়সওয়াল বলেন, তার এলাকার সমস্ত দোকানদার এই ধরণের বিষয়ে সর্বদা সতর্ক থাকেন এবং কখনও শিশুদের আনা চুরি করা জিনিস বা সন্দেহজনক জিনিসপত্র কেনেন না। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। নাবালক তার ভুল স্বীকার করে পুলিশের কাছে ক্ষমা চেয়েছে।


তবে, পরিবারের সম্মান এবং সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে দোকানদার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেননি। নাবালকের মা-ও ওই দোকানদারের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তার পরিবারের সম্মান রক্ষা করার জন্য এবং তার ছেলেকে এমন গুরুতর ভুল করা থেকে বিরত রাখার জন্য। পুলিশ নাবালককে কাউন্সেলিংও করেছে এবং ভবিষ্যতে এমন ভুলের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে সতর্ক করেছে।


তবে, স্থানীয়রাও দোকানদারের এই সততা ও বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা করছেন। আর সমাজমাধ্যমে এই ছোট ছেলে এবং দোকানদারের কাহিনী আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad