সীমান্তে ভারতের 'অপারেশন ত্রিশুল', থরহরি কম্প পাকিস্তান - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday, October 30, 2025

সীমান্তে ভারতের 'অপারেশন ত্রিশুল', থরহরি কম্প পাকিস্তান


ন্যাশনাল ডেস্ক, ৩০ অক্টোবর ২০২৫: পশ্চিম রাজস্থানের মরুভূমি থেকে গুজরাটের স্যার ক্রিক পর্যন্ত ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে আবারও যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি। আর এর নামকরণ করা হয়েছে অপারেশন ত্রিশুল। 'অপারেশন ত্রিশুল' হল ভারতের তিন সেনাবাহিনীর যৌথ সামরিক মহড়া, যা দেখে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তো কেঁপে উঠবেই, সেইসঙ্গে চীনা সেনাবাহিনীরও ঘুম উড়ে যাবে। এই মহড়া আজ অর্থাৎ ৩০শে অক্টোবর থেকে শুরু হবে, যা ১৩ দিন অর্থাৎ ১০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এর জন্য নোটাম (নোটিশ টু এয়ারম্যান) জারি করা হয়েছে। অপারেশন ত্রিশুল দেখে শত্রুদের যে হুঁশ উড়ে যাবে, একথা বলার অপেক্ষা রাখে না।


সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ১৩ দিন ধরে চলা এই যুদ্ধাভ্যাস (সামরিক মহড়া) হবে এখন পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে বড় যুদ্ধাভ্যাস। এতে তিন সেনার ৩০ হাজার জওয়ান যৌথভাবে অংশগ্রহণ করবেন। এতে ভারতের তিনটি সামরিক শক্তি একসাথে তাঁদের শক্তি প্রদর্শন করবে। অপারেশন ত্রিশুলে, দেশের তিনটি সেনাবাহিনীই ইউনিফাইড অপারেশন, ডিপ স্ট্রাইক এবং মাল্টি-ডোমেন ওয়ারফেয়ার অভ্যাস করবে।



মহড়া চলাকালীন অভিযান-

• খাল ও মরুভূমি অঞ্চলে আক্রমণাত্মক মহড়া,

• সৌরাষ্ট্র উপকূলের কাছে উভচর অভিযান,

• গোয়েন্দা, নজরদারি ও অনুসন্ধান (আইএসআর), ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার (ইডাব্লিউ) এবং সাইবার ক্ষমতার সঙ্গে জড়িত বহু-ডোমেন অভিযান আয়োজন করা হবে।


ত্রিশূল কেবল একটি মহড়া নয় বরং ভারতের স্বনির্ভরতা এবং বাস্তবিক অপারেশন ক্ষমতা এক সাথে প্রদর্শন করার সামরিক উদ্যোগ। এই লক্ষ্যে, ভারতীয় স্থলসেনা, বায়ুসেনা এবং নৌসেনার মধ্যে একটি যৌথ সমন্বিত কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে, যা এই অভ্যাসের মেরুদণ্ড।


কেন করা হচ্ছে এই যুদ্ধাভ্যাস?

এই অভ্যাসের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল এলাকার রেইকি এবং নজরদারির মাধ্যমে শত্রুর সব গতিবিধি চিহ্নিত করা। এর জন্য উন্নত প্রযুক্তি, আইএসআর ক্ষমতা, ইলেকট্রনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম এবং সাইবার প্ল্যাটফর্মগুলির একত্র ব্যবহার করা হবে। একইভাবে, অপারেশন রুমে ইনডোর ও আউটডোর অভ্যাস করিয়ে, বাস্তব সময়ের স্থিতিতে নির্ণয়-প্রক্রিয়া এবং নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিগুলির পরীক্ষা করা হচ্ছে। এতে ভারতীয় সেনাবাহিনী, বায়ুসেনা এবং নৌসেনার অস্ত্রগুলিও অংশ নেবে।


কত ধাপে হবে অভ্যাস/মহড়া?

এই মহড়াটি তিনটি ধাপে; প্রথমটি গুজরাটের স্যার ক্রিক এবং সামুদ্রিক সীমান্তের কাছে, এর নেতৃত্ব দেবে নৌসেনা। দ্বিতীয়টি স্থল সেনার নেতৃত্বে হবে জয়সলমেরে এবং এয়ার ডিফেন্স ও ফাইটারের সঙ্গে 

তৃতীয় ধাপ, যাতে বায়ু সেনা নেতৃত্ব দেবে। এরপর অবশেষে, তিনটা অ্যাগ্ৰেসিভ জায়েন্ট ইন্টিগ্রেটেড অভ্যাস করবে।


এদিকে জানা গিয়েছে, ভারতের এই যুদ্ধাভ্যাসের পরিপ্রেক্ষিতে, ইসলামাবাদ তার দক্ষিণ কমান্ডে সতর্কতা বাড়াতে বাধ্য হয়েছে এবং সম্পূর্ণ সতর্কতা বজায় রাখা হচ্ছে।


সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা সূত্র জানিয়েছে যে সিন্ধু ও পাঞ্জাবের দক্ষিণ কমান্ডের জন্য উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যেকোনও সম্ভাব্য আগ্রাসনের জবাব দেওয়ার জন্য বায়ু সেনা এবং নৌসেনাকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সিএনএন-নিউজ১৮-এর প্রতিবেদন অনুসারে, বিশেষ প্রস্তুতির জন্য বাহাওয়ালপুর স্ট্রাইক কোর এবং করাচি কোরকে নির্বাচন করা হয়েছে। শোরকোট, বাহাওয়ালপুর, রহিম ইয়ার খান, জ্যাকোবাবাদ, ভোলারি এবং করাচির মতো বিমানবন্দরগুলিকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। অতিরিক্তভাবে, আরব সাগরে টহল এবং নৌ তৎপরতা বাড়ানোর নির্দেশ জারি করা হয়েছে।


লাইভ হিন্দুস্তান সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এই মহড়া থর মরুভূমি এবং স্যার ক্রিক অঞ্চলের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এটি দক্ষিণাঞ্চলে নৌসেনা, বায়ুসেনা এবং স্থলসেনার মধ্যে সমন্বয় পরীক্ষা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। পাকিস্তানি আধিকারিকদের আশঙ্কা যে এই মহড়া করাচির সাথে সংযুক্ত সামুদ্রিক বাধা এবং উপকূলীয় অবকাঠামোকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। উল্লেখ্য, পাকিস্তানের প্রায় ৭০ শতাংশ বাণিজ্য করাচি বন্দর এবং বিন কাসিমের মাধ্যমে হয়, যা এই স্থাপনাগুলিকে রণনীতিক রূপে সংবেদনশীল করে তোলে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad