ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ২৪ অক্টোবর ২০২৫: পাকিস্তান ইতিমধ্যেই দারিদ্র্যের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। আর এরই মাঝে পাকের দুর্দশা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে এখন টমেটো। পাকিস্তানের মানুষ টমেটোর জন্য এখন "বাহ" নয়, "আহ!" বলে চিৎকার করছে। আজ্ঞে হ্যাঁ, শাহবাজ শরীফের দেশে টমেটো এখন পরিণত হয়েছে বিলাসবহুল একটি পণ্যে। ইসলামাবাদ থেকে করাচি তথা লাহোর পর্যন্ত, টমেটোর দামই পাকিস্তানিদের মুখ লাল করে দিয়েছে। টমেটোর দাম এখানে আকাশছোঁয়া।
শুধু টমেটোই কেন, পাকিস্তানে অন্যান্য সবজির দামও আকাশছোঁয়া। একসময় প্রতি কেজি ১০০ টাকায় পাওয়া টমেটো এখন প্রতি কেজি ৭০০ টাকায় পৌঁছেছে। এর পেছনের কারণ আরও ভয়াবহ। বলা হচ্ছে যে, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধের পর সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে পাকিস্তানে মুদ্রাস্ফীতির বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে। অর্থাৎ, গোলাবারুদ যা করতে পারেনি তা টমেটো করে দিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সীমান্তে সবজি বহনকারী অনেক ট্রাক আটকে আছে, যার ফলে পণ্য বাজারে পৌঁছাতে পারছে না। কাবুলের পাক-আফগান চেম্বার অফ কমার্সের প্রধান খান জান আলোকোজাই বলেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সমস্ত বাণিজ্য এবং পণ্য পরিবহন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, তাজা ফল, শাকসবজি, খনিজ পদার্থ, ওষুধ, গম, চাল, চিনি, মাংস এবং দুগ্ধজাত পণ্য দুই দেশের মধ্যে বার্ষিক ২.৩ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যের একটি বড় অংশ।" আলোকোজাই বলেন, "আমরা প্রতিদিন প্রায় ৫০০ কন্টেইনার সবজি রপ্তানির জন্য পাই, যার সবকটিই নষ্ট হয়ে গেছে।"
উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের প্রধান তোরখাম সীমান্তের একজন পাকিস্তানি আধিকারিক জানিয়েছেন যে, সীমান্তের উভয় পাশে প্রায় ৫,০০০ কন্টেইনার পণ্য আটকে আছে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, আধিকারিক বলেছেন যে, বাজারে আগে থেকেই টমেটো, আপেল এবং আঙ্গুরের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে, কিন্তু এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। বর্তমানে, জনসাধারণ বিপর্যস্ত, অন্যদিকে শরীফ সরকার তার প্রতিবেশীদের সাথে যুদ্ধে ব্যস্ত।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। পাকিস্তানি বিমান বাহিনী আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিমান হামলা চালালে সংঘর্ষ শুরু হয়। এই হামলার পর, পাকিস্তান তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদকে হত্যার দাবী করে। মেহসুদ নিরাপদে আছেন বলে দাবী করে একটি ভিডিও প্রকাশ করলে পাকিস্তানের দাবী উড়িয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে, আফগানিস্তান সীমান্তে পাকিস্তানি সেনা পোস্টগুলিকেও নিশানা করে। ১১ অক্টোবর থেকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সীমান্ত বন্ধ রয়েছে।

No comments:
Post a Comment