জেমস ওয়েবের ক্যামেরায় ধরা পড়ল আদিম মহাবিশ্বের ক্ষুধার্ত ব্ল্যাক হোল—৫৭ কোটি বছর পরই শুরু ভয়ানক ভোজ - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday, November 20, 2025

জেমস ওয়েবের ক্যামেরায় ধরা পড়ল আদিম মহাবিশ্বের ক্ষুধার্ত ব্ল্যাক হোল—৫৭ কোটি বছর পরই শুরু ভয়ানক ভোজ


 জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ এমন এক অদ্ভুত দৃশ্য ধরেছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনও ভাবেননি। গবেষকরা মহাবিশ্বের জন্মের মাত্র ৫৭০ মিলিয়ন বছর পর তৈরি হওয়া একটি ছোট ছায়াপথ খুঁজে পেয়েছেন। এই ছায়াপথের নাম CANUCS-LRD-z8.6, যাকে “লিটল রেড ডট” বলা হয়। এখানে একটি বিশালাকৃতি কৃষ্ণগহ্বর পাওয়া গেছে, যা খুব দ্রুত চারপাশের গ্যাস টেনে খাচ্ছে।


এত ছোট ও নবীন একটি ছায়াপথের মধ্যে এ ধরনের বিশাল কৃষ্ণগহ্বর পাওয়া বিজ্ঞানীদের ভীষণভাবে অবাক করেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, প্রাচীন মহাবিশ্বে কৃষ্ণগহ্বর হয়তো ছায়াপথের আগেই তৈরি হতো বা ছায়াপথের তুলনায় অনেক দ্রুত বড় হয়ে উঠত। অর্থাৎ মহাবিশ্বের প্রথম দিকের দিনগুলোতে কৃষ্ণগহ্বরের বৃদ্ধি ছিল অনেক বেশি শক্তিশালী ও দ্রুত।


জেমস ওয়েবের NIRSpec যন্ত্র প্রথমবার এই দূরবর্তী ছায়াপথের কেন্দ্র থেকে গ্যাসের অত্যন্ত দ্রুত ঘূর্ণন, আয়নীকরণ এবং সেই গ্যাসের এক জায়গায় ধসে পড়ার লক্ষণ ধরতে পেরেছে—যা স্পষ্ট করে যে সেখানে একটি কৃষ্ণগহ্বর প্রবল শক্তিতে সবকিছু টেনে নিচ্ছে।


সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো—ছায়াপথটি খুব ছোট হলেও কৃষ্ণগহ্বরটি তার তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে বড়। সাধারণ নিয়ম ছিল—ছায়াপথ বড় হলে কৃষ্ণগহ্বরও বড় হবে। কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে—ছায়াপথ ছোট, কৃষ্ণগহ্বর বিশাল। এর ফলে আগের বহু তত্ত্ব প্রশ্নের মুখে পড়েছে।


এই আবিষ্কার গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি দেখাচ্ছে যে বিগ ব্যাংয়ের খুব অল্প সময় পরই মহাবিশ্বে বিশাল কৃষ্ণগহ্বর তৈরি হয়েছিল। এ ঘটনা বিজ্ঞানীদের ধারণা বদলে দিচ্ছে যে কিভাবে প্রথম কোয়াসার বা প্রথম উজ্জ্বল গ্যালাক্সিগুলো তৈরি হয়েছিল।


বিজ্ঞানীরা এখন ALMA ও জেমস ওয়েব দিয়ে আরও পর্যবেক্ষণের পরিকল্পনা করছেন। এতে জানা যাবে এই ছায়াপথে কত গ্যাস আছে, কোথায় ধুলো তৈরি হয় এবং কৃষ্ণগহ্বর কত দ্রুত বড় হচ্ছে। তারা আশা করছেন, আরও অনেক “লিটল রেড ডট” পাওয়া গেলে মহাবিশ্বের শুরুর ইতিহাস নতুনভাবে লেখা যাবে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad