ন্যাশনাল ডেস্ক, ২৪ নভেম্বর ২০২৫: দীর্ঘ অসুস্থতার সঙ্গে লড়াইয়ের পর না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা ধর্মেন্দ্র। সোমবার (২৪ নভেম্বর, ২০২৫) ৮৯ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছিলেন এবং তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছিল। নিয়মিত চেকআপ এবং চিকিৎসার জন্য তাকে ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েকদিন চিকিৎসার পর, তাঁর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে চিকিৎসার জন্য বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। বাড়িতে ধর্মেন্দ্রের যত্নের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছিল, কিন্তু তাঁর স্বাস্থ্যের তেমন উন্নতি হয়নি, শেষমেষ চির নিদ্রায় ধর্মেন্দ্র। অভিনেতার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেক তারকা, ভক্ত থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও ধর্মেন্দ্রর প্রয়ানে শোকাহত। সমাজমাধ্যমে তাঁকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিচ্ছেন সকলেই।
অভিনেতার মৃত্যুতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স (পূর্বে ট্যুইটার)-এ একটি আবেগপ্রবণ পোস্ট করেছেন। তিনি লিখেছেন, "ভারতীয় চলচ্চিত্র জগৎ আজ একজন মূল্যবান তারকাকে হারিয়েছে। খ্যাতিমান অভিনেতা ধর্মেন্দ্র আর আমাদের মধ্যে নেই। ২০১২ সালে পদ্মভূষণে ভূষিত ধর্মেন্দ্র কয়েক দশক ধরে সিনেমাপ্রেমীদের হৃদয়ে রাজত্ব করেছেন এবং তাঁর ব্যতিক্রমী অভিনয় ও সরল জীবনযাপনের মাধ্যমে গভীর ছাপ রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যু একটি যুগের সমাপ্তি। এই শোকের মুহূর্তে আমি তাঁর পরিবার এবং লক্ষ লক্ষ ভক্তদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। ঈশ্বর তাঁর আত্মাকে শান্তি প্রদান করুন।"
ধর্মেন্দ্র শ্বাসকষ্ট এবং বয়সজনিত অন্যান্য নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। হাসপাতাল এবং বাড়িতে নিয়মিত চিকিৎসা এবং পর্যবেক্ষণ সত্ত্বেও, তাঁর অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁর দেখাশোনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। যেকোনও জরুরি পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক সাহায্য নিশ্চিত করার জন্য ধর্মেন্দ্রের বাড়িতে অ্যাম্বুলেন্স এবং ডাক্তারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তাঁর ভক্ত এবং চলচ্চিত্র জগতের অনেকেই তাঁর স্বাস্থ্যের বিষয়ে নিয়মিত খবর নিতেন। সালমান খান, শাহরুখ খান এবং গোবিন্দের মতো অনেক তারকা ধর্মেন্দ্রকে হাসপাতালে এবং বাড়িতে দেখতে গিয়েছিলেন। তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিতে যান বিগ বি-সহ অনেকেই। এই আবহেই তাঁর মৃত্যুর খবরে সমগ্র চলচ্চিত্র জগতে শোকের ছায়া নেমে আসে।
হিন্দি সিনেমায় ধর্মেন্দ্রর ক্যারিয়ার প্রায় ছয় দশক ধরে বিস্তৃত ছিল। তিনি বলিউডের "হি-ম্যান" হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি ১৯৬০ সালে "দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে" ছবি দিয়ে তার ক্যারিয়ার শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি "শোলা অর শবনম", "আনপড়", "বন্দিনী", "পূজা কে ফুল", "হাকীকত", "ফুল অর পাথ্থর", "অনুপমা", "খামোশি", "পেয়ার হি পেয়ার", "তুম হাসিন ম্যায় জওয়ান", "সীতা অর গীতা", "ইয়াদোঁ কি বারাত" এবং "শোলে"- র মতো স্মরণীয় ছবিতে অভিনয় করেন।
ধর্মেন্দ্রর অনবদ্য অভিনয় দক্ষতা তাঁকে দর্শকদের হৃদয়ে বিশেষ স্থান করে দিয়েছে। তিনি তাঁর ক্যারিয়ারজুড়ে অসংখ্য পুরস্কারও জিতেছেন। ২০১২ সালে, তিনি ভারত সরকারের তৃতীয় সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান পদ্মভূষণে ভূষিত হন। তিনি বেশ কয়েকটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারও জিতেছেন। অসংখ্য সমালোচক এবং দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। তাঁর অবদান তাঁকে বলিউডের অন্যতম সেরা এবং সর্বাধিক সম্মানিত অভিনেতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।


No comments:
Post a Comment