এয়ারপোর্ট ডিভোর্সের উৎপত্তি
ব্রিটিশ লেখক হিউ অলিভার প্রথমে 'এয়ারপোর্ট ডিভোর্স' শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। তিনি এটিকে প্রকৃত বিবাহবিচ্ছেদ হিসেবে বর্ণনা করেননি বরং সম্পর্ককে মজবুত করার একটি উপায় হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। হিউ এবং তাঁর বাগদত্তা প্রায়শই ফ্লাইটের আগে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঝগড়া করতেন। কখনও কখনও বিমানে ওঠার তাড়াহুড়ো, কখনও কখনও শুল্কমুক্ত থাকার ঝামেলা—এই তুচ্ছ বিষয়গুলি তাদের যাত্রাকে চাপের করে তুলত।
তাই, তারা নিরাপত্তা পরীক্ষার পরে কিছুক্ষণের জন্য আলাদা হওয়ার, একসাথে সময় কাটানোর এবং তারপর ফ্লাইটে ওঠার পরে আবার দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন। তারা এই পদ্ধতিটিকে "এয়ারপোর্ট ডিভোর্স' " বলে অভিহিত করেছিলেন। এর অর্থ কিছু দূরত্ব তৈরি করে সম্পর্ককে মজবুত করা।
কীভাবে এটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ড হয়ে উঠল?
হিউ অলিভার যখন দ্য টাইমসে তাঁর গল্প লেখেন, তখন এটি দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়া এবং সংবাদপত্রগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্বজুড়ে দম্পতিরা এটি গ্রহণ করতে শুরু করেন। কেউ কেউ এটিকে রসিকতা হিসেবে ট্রাই করেন, আবার কেউ কেউ এটিকে চাপ কমানোর পদ্ধতি হিসেবে বর্ণনা করেন।
এমনকি আমেরিকান টিভি উপস্থাপিকা কেলি রিপা মজা করে তাঁর স্বামীর কাছে এটি উল্লেখ করেছিলেন, পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, সম্ভবত তাঁদেরও এটি ট্রাই করা উচিৎ। এর পরে, 'এয়ারপোর্ট ডিভোর্স'" শব্দটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়।
এর বৈজ্ঞানিক কারণও আছে-
ভ্রমণের চাপ একটি সাধারণ সমস্যা। দীর্ঘ লাইন, নিরাপত্তা পরীক্ষা, লাগেজের ঝামেলা এবং বিমানে দেরি - এই সবই উদ্বেগ বাড়ায়। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভ্রমণের সময় দম্পতিদের মধ্যে ঝগড়া সাধারণ। বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে, ভ্রমণের সময় কিছু ব্যক্তিগত স্থান দেওয়া সম্পর্কের জন্য উপকারী। হিউ অলিভারের পদ্ধতি এই বিষয়ে কাজ করে। একটি সংক্ষিপ্ত বিচ্ছেদ প্রায়শই সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া থেকে বাঁচাতে পারে।
সকলের জন্য উপযুক্ত নয়-
তবে, এই পদ্ধতিটি সবার জন্য উপযুক্ত নয়। শিশুদের সাথে বা দীর্ঘ ভ্রমণে এটি গ্রহণ করা কঠিন হতে পারে। তবে এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটু দূরত্ব থাকা প্রয়োজন। ভালোবাসা সবসময় একসাথে থাকার কথা নয়; কখনও কখনও একা থাকাও সম্পর্ককে মজবুত করতে পারে।

No comments:
Post a Comment