লাইফস্টাইল ডেস্ক, ১৪ নভেম্বর ২০২৫: 'মন খারাপ লাগছে, একটু গান শোনা না।' -- এমন পরামর্শ বন্ধুবান্ধব বা কাছের মানুষের থেকে প্রায়ই পেয়ে থাকি। আর একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, গান বা সঙ্গীত যাই হোক না কেন, শুনলে মানসিক চাপ কমে এবং মানুষের মন ভালো হয়ে যায়। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে, সঙ্গীত স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বিশেষ করে যখন মানসিক চাপ থাকে তখন সঙ্গীত শোনা মানসিক চাপ কমাতে এবং মেজাজ উন্নত করতে পারে। সঙ্গীত আমাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। এটি কেবল মেজাজ উন্নত করে না বরং ঘুমের মানও উন্নত করে। আজকের দ্রুতগতির জীবনে, অনিদ্রা লক্ষ লক্ষ মানুষকে সমস্যায় ফেলছে। এমন পরিস্থিতিতে, মানুষ রাতের ভালো ঘুমের জন্য সঙ্গীতের সহায়তা নিতে পারেন।
স্লিপ ফাউন্ডেশনের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ঘুমানোর আগে মৃদু এবং প্রশান্তিদায়ক সঙ্গীত শোনা ঘুমকে প্ররোচিত করতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি এটি ঘুম আরও গভীর করে। প্রায়শই দেখা যায় যে, বাবা-মায়েরা তাঁদের শিশুদের ঘুম পাড়ানোর জন্য ঘুমপাড়ানি গান গায় এবং বিজ্ঞানও এটিকে ন্যায্যতা দেয়। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, স্কুলগামী শিশুরাও যখন প্রশান্তিদায়ক সঙ্গীত শোনে তখন তারা আরও ভালো ঘুমায়। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও সঙ্গীতের একই প্রভাব দেখা গেছে। একটি গবেষণা অনুসারে, যারা ঘুমানোর আগে প্রায় ৪৫ মিনিট গান শোনেন, তারা প্রথম দিন থেকেই ভালো ঘুমাতে শুরু করেন। এটিকে সঙ্গীত থেরাপি হিসাবেও বিবেচনা করা যেতে পারে।
অনিদ্রার মতো ঘুমের সমস্যায় ভোগা নারীদের জন্যও সঙ্গীত সহায়ক প্রমাণিত হয়েছে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা টানা ১০ দিন ঘুমানোর আগে তাঁদের প্রিয় সঙ্গীত অ্যালবাম শুনেছেন, তাঁদের ঘুমাতে যাওয়ার সময় ২৭ থেকে ৬৯ মিনিট থেকে কমিয়ে মাত্র ৬ থেকে ১৩ মিনিটে এসেছে। সঙ্গীত কেবল দ্রুত ঘুম আনার ক্ষেত্রেই কার্যকর নয় বরং ঘুমের মান উন্নত করার ক্ষেত্রেও কার্যকর। সঙ্গীতের প্রভাব কেবল মস্তিষ্কের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি সমগ্র শরীরের জৈবিক প্রক্রিয়াগুলিকেও প্রভাবিত করে। আমরা যখন গান শুনি, তখন মস্তিষ্ক শব্দগুলিকে বৈদ্যুতিক সংকেতে রূপান্তরিত করে, যা শরীরে বেশ কিছু হরমোনের পরিবর্তন ঘটায়। সঙ্গীত স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের ক্ষরণ কমায়, যা স্ট্রেস কমায় এবং ঘুমাতে সাহায্য করে। সঙ্গীত ডোপামিন নামক সুখী হরমোনও নিঃসরণ করে, যা ব্যক্তিকে ভালো বোধ করায়।

No comments:
Post a Comment