শিশুর হৃদযত্ন: ছোটবেলার ৫ অভ্যাসেই সারা জীবনের হার্ট সুরক্ষিত, জানাচ্ছেন দিল্লির শিশু-চিকিৎসক - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday, December 3, 2025

শিশুর হৃদযত্ন: ছোটবেলার ৫ অভ্যাসেই সারা জীবনের হার্ট সুরক্ষিত, জানাচ্ছেন দিল্লির শিশু-চিকিৎসক


 বর্তমান সময়ে হৃদ্‌রোগ কেবল বয়স্কদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। অনিয়মিত জীবনযাপন, জাঙ্ক ফুড, স্ট্রেস ও শারীরিক নিষ্ক্রিয়তার কারণে আজকাল শিশু ও কিশোরদের মধ্যেও হার্ট অ্যাটাক, উচ্চ রক্তচাপ ও হার্ট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ছে। আগে যেখানে এসব রোগ মূলত বয়স্কদের সমস্যা ছিল, এখন তা পরিবারের ছোট সদস্যদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে — যা অভিভাবকদের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।


শিশুর হৃদয় সুস্থ রাখা বাবা-মায়ের অন্যতম বড় দায়িত্ব। কারণ, শৈশবেই তৈরি হওয়া কিছু জীবনধারা ও অভ্যাস ভবিষ্যৎ জীবনে হার্ট সুস্থ রাখার ভিত্তি তৈরি করে। এই বিষয়ে কথা বললেন দিল্লির শাহদরায় অবস্থিত এস.ডি.এন হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ ললিত হরি প্রসাদ সিংহ।



কেন শিশুদের মধ্যে বাড়ছে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি?


ডাঃ সিংহের মতে, কয়েকটি কারণে শিশুদের হৃদ্‌স্বাস্থ্য আজ বিপদে পড়ছে—


অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড ও চর্বিযুক্ত খাবার


মোবাইল, টিভি, ভিডিও গেমের কারণে শারীরিক নড়াচড়া কমে যাওয়া


স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন


পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব


মানসিক চাপ


পরিবারের মধ্যে হৃদ্‌রোগের ইতিহাস



শিশুর হৃদয় সুস্থ রাখতে ডাক্তারদের ৫টি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ


১. পুষ্টিকর খাবার অভ্যাস করান


শিশুকে সবুজ শাকসবজি, ডাল, ডিম, মাছ, দুগ্ধজাত খাবার ও ফল খাওয়ানোর অভ্যাস ছোটবেলা থেকেই গড়ে তুলতে হবে।

জাঙ্ক ফুড, কোলা, অতিরিক্ত ভাজাপোড়া সপ্তাহে ১ দিনের বেশি নয়।


২. প্রতিদিন কমপক্ষে ১ ঘণ্টা শারীরিক ব্যায়াম


ডাঃ সিংহ বলেন,

“শিশুরা যত বেশি বাইরে দৌড়াবে, খেলবে—ততই ভালো কাজ করবে তাদের হৃদয়।”

সাইক্লিং, দৌড়ানো, সাঁতার, খেলা—এসব শিশুদের হার্ট শক্তিশালী রাখে।


৩. মোবাইল ও স্ক্রিন টাইম সীমিত করুন


বিশেষজ্ঞের মতে, দিনে ১–১.৫ ঘণ্টার বেশি স্ক্রিন টাইম শিশুদের জন্য ক্ষতিকর। এতে স্থূলতা বাড়ে এবং হার্টের ওপর চাপ পড়ে।


৪. পর্যাপ্ত ঘুম


বয়স অনুযায়ী শিশুর ঘুমের দরকার—


ছোটদের (৩–৫ বছর): ১০–১৩ ঘণ্টা


৬–১২ বছর: ৯–১২ ঘণ্টা


কিশোরদের (১৩–১৮ বছর): ৮–১০ ঘণ্টা



ঘুমের অভাব হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।


৫. বার্ষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান


শিশুর ওজন, রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও রক্তের সুগার মান বছরে অন্তত একবার চেক করানো উচিত।

যদি জন্মের সময় হার্টে কোনও সমস্যা থাকে, তবে নিয়মিত ফলো-আপ জরুরি।


ডাক্তারদের বিশেষ সতর্কবার্তা


ডাঃ সিংহের মতে—

“শিশুর অল্প বয়সে বুকে ব্যথা, দম ফুরিয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত ঘাম, অস্বাভাবিক ক্লান্তি—এসব কখনোই অবহেলা করা যাবে না। এগুলো হৃদ্‌সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।”


যদি পরিবারে হৃদ্‌রোগের ইতিহাস থাকে, তবে শিশুর ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা জরুরি।


বাচ্চাদের হৃদ্‌স্বাস্থ্য রক্ষা শুরু হয় পরিবার থেকেই। পুষ্টিকর খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম এবং সীমিত স্ক্রিন টাইম—এই চারটি অভ্যাসই ভবিষ্যতে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমায়। বিশেষজ্ঞের মতে, ছোটবেলায় স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল গড়ে তুললে বড় হয়ে শিশুদের হার্ট অনেক বেশি সুস্থ থাকতে পারে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad