শীতের আগমনের সাথে সাথে চা খাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। ঠান্ডা থেকে মুক্তি পেতে মানুষ সারা দিন কয়েক কাপ চা পান করে। চা উষ্ণতা এবং সতেজতা প্রদান করে, কিন্তু অতিরিক্ত চা পান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। চায়ে ক্যাফেইন এবং ট্যানিনের মতো উপাদান থাকে, যা অতিরিক্ত পরিমাণে শরীরের ক্ষতি করতে পারে। আসুন জেনে নিই পাঁচটি বিপজ্জনক রোগ যা অজান্তে অতিরিক্ত চা পানের ফলে হতে পারে।
চা পানের ফলে সৃষ্ট ৫টি রোগ
১. রক্তাল্পতা
চায় থাকা ট্যানিন আয়রন শোষণে বাধা সৃষ্টি করে। বিশেষ করে অতিরিক্ত কালো চা পান করলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এর ফলে রক্তক্ষরণ, ক্লান্তি, মাথা ঘোরা এবং দুর্বলতা দেখা দেয়। শীতকালে, মানুষ খাবারের সাথে চা পান করে, যা আয়রন শোষণকে আরও কমিয়ে দেয়।
২. অনিদ্রা
চায় ক্যাফেইন থাকে, যা মস্তিষ্ককে সজাগ রাখে। অতিরিক্ত চা পান করলে অনিদ্রা হতে পারে। ক্যাফেইন ঘুমের হরমোনকে প্রভাবিত করে। শীতকালে গভীর রাতে চা পান করলে অনিদ্রা বৃদ্ধি পায়, যার ফলে সারা দিন ক্লান্তি এবং খিটখিটে ভাব দেখা দেয়।
৩. জয়েন্টে ব্যথা এবং শক্ত হয়ে যাওয়া
শীতকালে অতিরিক্ত চা এবং কফি পান করলে জলশূন্যতা হতে পারে। ক্যাফেইন একটি মূত্রবর্ধক, যা জল টেনে নেয়। এটি জয়েন্টের আর্দ্রতা হ্রাস করে, হাঁটু এবং হাড়ের শক্ত হয়ে যাওয়া এবং ব্যথা বৃদ্ধি করে। শীতকালে চা আগে থেকে বিদ্যমান জয়েন্টের সমস্যাগুলিকে আরও খারাপ করতে পারে।
৪. অ্যাসিডিটি এবং পেটের সমস্যা
খালি পেটে বা অতিরিক্ত চা পান করলে পেটের অ্যাসিড বৃদ্ধি পায়। এর ফলে বুক জ্বালাপোড়া, গ্যাস এবং বদহজম হতে পারে। ট্যানিন পেটের আস্তরণকে জ্বালাতন করে। শীতকালে মশলাদার খাবার এবং চা একসাথে খেলে পাচনতন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে।
৫. কিডনিতে পাথরের ঝুঁকি
কালো চাতে অক্সালেট বেশি থাকে, যা প্রচুর পরিমাণে কিডনিতে পাথর তৈরিতে অবদান রাখতে পারে। অতিরিক্ত চা পান করলে পানিশূন্যতাও হয়, যা কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। দীর্ঘ সময় ধরে এটি করলে কিডনির ক্ষতি হতে পারে।
চায়ের উপকারিতা আছে, তবে দিনে ২-৩ কাপের বেশি পান করবেন না। খাবারের ১ ঘন্টা পর চা পান করুন এবং প্রচুর জল পান করুন। যদি আপনার কোন সমস্যা হয়, তাহলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। শীতকালে উষ্ণতার জন্য ভেষজ চা বা আদা চা ভালো বিকল্প।
দাবিত্যাগ: এই নিবন্ধটি শুধুমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য। এটি শুধুমাত্র একটি পরামর্শ হিসেবে বিবেচনা করুন। এই ধরনের কোনও তথ্যের উপর কাজ করার আগে, অনুগ্রহ করে একজন ডাক্তার বা বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন।

No comments:
Post a Comment