“ভোটার লিস্ট যাচাইয়ে বিস্ময়কর ফারাক: একদিনে ২,২০৮ থেকে ৪৮০—বেঙ্গলে SIR নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday, December 3, 2025

“ভোটার লিস্ট যাচাইয়ে বিস্ময়কর ফারাক: একদিনে ২,২০৮ থেকে ৪৮০—বেঙ্গলে SIR নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন

 


পশ্চিমবঙ্গে চলতে থাকা ভোটার তালিকার বিশেষ সঘন পুনরিীক্ষণ (SIR) প্রক্রিয়ার সময় বড় ধরনের গড়মিল সামনে এসেছে। বিভিন্ন জেলার নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাঠানো প্রাথমিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল যে রাজ্যের ২,২০৮টি ভোটকেন্দ্রে একজনও মৃত, নিখোঁজ, স্থানান্তরিত বা ডুপ্লিকেট ভোটার পাওয়া যায়নি এবং এসব বুথে বিতরণ করা সব ফর্ম সম্পূর্ণ ভরা অবস্থায় ফেরত এসেছে।


কিন্তু সোমবার নির্বাচন কমিশন যখন এসব জেলার কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চায়, তখন মঙ্গলবার পাঠানো সংশোধিত তথ্য অনুযায়ী এই সংখ্যা কমে মাত্র ৪৮০-এ নেমে আসে। মাত্র ২৪ ঘণ্টায় এত বড় পরিবর্তন অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।


প্রশাসনের একটি অংশ জানিয়েছে—সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ হলো তথ্য নিয়মিত আপডেট হওয়া। তবে তা সত্ত্বেও পুরো ঘটনাকে ঘিরে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।


জানা গেছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় সবচেয়ে বেশি এমন বুথ চিহ্নিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—


রায়দিঘি: ৬৬


কুলপি: ৫৮


মগরাহাট: ১৫


পাথরপ্রতিমা: ২০



বিজেপি নেতার প্রতিক্রিয়া


এই বড় পরিবর্তন নিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা সুকান্ত মজুমদার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন—

সোমবার কমিশনকে জানানো হয়েছিল যে ২,২০০-এর বেশি বুথ থেকে সব ফর্মই ফিরে এসেছে। অর্থাৎ সেখানে কেউ মারা যাননি, কেউ এলাকা বদলাননি এবং কোথাও ডুপ্লিকেট নামও পাওয়া যায়নি।

কিন্তু জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের কাছ থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়ার পরই সংখ্যা হঠাৎ কমে ৪৮০ হয়ে গেল।

তিনি তীব্র মন্তব্য করেন—“এটা কি কোনো জাদু? এমন ঘটনা কেবল বাংলাতেই সম্ভব।”


কমিশনের পর্যবেক্ষণ


নির্বাচন কমিশন একটি আলাদা তালিকাও প্রকাশ করেছে, যেখানে যাচাই-বাছাই সংক্রান্ত একাধিক ত্রুটির কথা উল্লেখ আছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখা গেছে ‘প্রোজেনি ম্যাপিং’ পদ্ধতিতে—অর্থাৎ ভোটারের নাম তার বাবা-মা বা দাদা-দাদির তথ্যের ভিত্তিতে যাচাই করা।


যেসব ভোটারের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ছিল না, তাদের পুনরায় যাচাই করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

যেসব বুথে অসম্পূর্ণ যাচাইয়ের সংখ্যা বেশি, সেগুলো আবার পরিদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


SIR-এ কত মানুষের নাম বাদ পড়তে পারে?


মঙ্গলবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত মোট ৪৬.২০ লক্ষ ফর্ম ফেরত এসেছে। এর মধ্যে—


মৃত ভোটার: ২২.২৮ লক্ষ


নিখোঁজ: ৬.৪১ লক্ষ


স্থানান্তরিত: ১৬.২২ লক্ষ


ডুপ্লিকেট নাম: ১.০৫ লক্ষ



মৃত ভোটারের হার জেলার হিসাবে—


কলকাতা নর্থ: ৬.৯১% (সবচেয়ে বেশি)


কলকাতা সাউথ: ৬.০৬%


উত্তর ২৪ পরগনা: ৩.৪৭%


দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ৩.২৫%


পশ্চিম মেদিনীপুর: ২%


পূর্ব মেদিনীপুর: ১.৪% (সবচেয়ে কম)



কমিশনের আরও নির্দেশ


কমিশন জেলা প্রশাসনকে আরেকটি চিঠি পাঠিয়েছে, যেখানে বহুতল ভবনে থাকা ভোটকেন্দ্রগুলোর পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

৬ ডিসেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।

কমিশন জানায়—এ উদ্যোগের লক্ষ্য হলো অ্যাপার্টমেন্ট ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ভোটদানের হার বাড়ানো।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad