উত্তর ২৪ পরগনা, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫: বাংলাদেশি এক নাবালিকাকে বিয়ে করে চোরা পথে ভারতে নিয়ে এসে গ্রেফতার এক বিজেপি কর্মী। এসআইআর আবহে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবড়ায়। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক তরজা।
চঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার হাবড়া কুমড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের টুনিঘাটা এলাকার। ৩৯ বছর বয়সী এই অভিযুক্ত বিজেপি কর্মীর নাম বিশ্বজিৎ বাগচি। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিশ্বজিৎ বাগচী হাবড়া টুনিঘাটা এলাকার বাসিন্দা। মাস দু'য়েক আগে তিনি ইন্ডিয়ান পাসপোর্ট ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে পা রাখেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার ১৬ বছরের এক নাবালিকাকে বিয়ে করে চলতি বছরের নভেম্বর মাসের ১০ তারিখ পেট্রাপোল বর্ডার এলাকা থেকে অবৈধ ভাবে এই নাবালিকা ভারতে প্রবেশ করে।
আরও জানা গিয়েছে, এই নাবালিকা প্রথমে বাগদা থানার এক আত্মীয়র বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরবর্তীতে বিশ্বজিৎ বাগচি ফের পাসপোর্টের মাধ্যমে দেশে ফিরে বাগদার ওই আত্মীয়র বাড়ি থেকে নাবালিকাকে হাবড়া টুনিঘাটায় নিজের বাড়ি নিয়ে আসেন।
পরবর্তীতে সিডব্লিউসি কর্মীদের সহযোগিতায় হাবড়া থানার পুলিশ টুনিঘাটার বাড়ি থেকে বিশ্বজিৎ বাগচি এবং নাবালিকাকে হাবড়া থানার পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিশ্বজিৎ বাগচিকে পুলিশ গ্রেফতার করে - পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজত চেয়ে বারাসাত আদালতে পাঠানো হয়।পাশাপশি নাবালিকাকে পাঠানো হয় একটি হোমে।
এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সদের ভূমিকা নিয়ে। প্রশ্ন উঠছে দিল্লী বিস্ফোরণ কাণ্ডের রাতে কীভাবে বাংলাদেশি ১৬ বছরের এই নাবালিকা পেট্রাপোল বর্ডার লাগোয়া সীমান্ত থেকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করলেন? আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাবড়ায় শুরু হয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক বাগযুদ্ধ।
হাবড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা নারায়ণ চন্দ্র সাহা কটাক্ষ করে বলেন, "শুভেন্দু সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করছে, কারণ উনি সবসময় রোহিঙ্গাদের গল্প দেন।" তিনি বলেন, "ভাবতে অবাক লাগে বিজেপির সক্রিয় এক কর্মী একাজ করেছে। পুলিশকে ধন্যবাদ তারা ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে।" তাঁর আবেদন, প্রশাসন যেন নাবালিকার বাড়িতে যোগাযোগ করে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। পাশাপাশি অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকেও আক্রমণ করেন তৃণমূল নেতা।
অন্যদিকে তৃণমূলের অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। এই বিষয়ে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব বিপ্লব হালদার বলেন, "বিজেপি কোনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। বিশ্বজিৎ আমাদের দলের সমর্থক হতে পারে। তৃণমূল নিজের দুর্নীতি ঢাকতে একটা ঘটনাকে বড় করতে আর বিজেপির নামে অভিযোগ করতে চেষ্টা করছে। নাবালিকাকে বিয়ে করলে সেই বিষয়ে পুলিশ আইনি পদক্ষেপ করবে, তা সে যেই দলের লোক করুক না কেন। তাই বিজেপিকে এভাবে আক্রমণ করে ছোট করা যাবে না।"

No comments:
Post a Comment