প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭:০৫:০১ : এপ্রিল মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক আরোপের পর বিশ্ব অর্থনীতিতে যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, তা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থার দুর্বলতাগুলিকে প্রকাশ করে দিয়েছে। শেয়ার বাজারে তীব্র পতন, দেশগুলির মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য যুদ্ধ এবং সম্পর্কের টানাপোড়েন এই নীতির প্রত্যক্ষ পরিণতি। এর প্রতিকূল প্রভাব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরেও অনুভূত হয়েছে, যেখানে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি সাধারণ মানুষের পকেটের উপর প্রভাব ফেলেছে, যা অনেক মার্কিন আইন প্রণেতা স্বীকার করেছেন।
এই পটভূমিতে, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন টাইমস নেটওয়ার্ক ইন্ডিয়া ইকোনমিক কনক্লেভ ২০২৫-এ স্পষ্টভাবে বলেছেন যে শুল্ক এবং অন্যান্য ব্যবস্থার মাধ্যমে বিশ্ব বাণিজ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা উদ্বেগের বিষয়। তিনি বলেন যে এটি এখন সম্পূর্ণ স্পষ্ট যে বিশ্ব বাণিজ্য সম্পূর্ণ অবাধ বা ন্যায্য নয় এবং ভারতকে খুব চিন্তাশীল এবং কৌশলগতভাবে এগিয়ে যেতে হবে।
সীতারামন জোর দিয়ে বলেছেন যে কেবল শুল্ক আলোচনা যথেষ্ট নয়, বরং দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক শক্তি ভারতকে বিশ্ব মঞ্চে অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করতে পারে। তিনি আরও বলেন যে ভারতকে প্রায়শই অন্তর্মুখী বা শুল্ক রাজা বলে অভিযুক্ত করা হয়, কিন্তু সত্য হল ভারত কখনও শুল্ককে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেনি। ভারত কেবল তার দেশীয় শিল্পগুলিকে রক্ষা করার জন্য শুল্ক আরোপ করেছে, যাতে কোনও বিদেশী দেশ বা কোম্পানি স্থানীয় শিল্পগুলিকে সস্তা বা অতিরিক্ত পণ্য দিয়ে ক্ষতি করতে না পারে।
অর্থমন্ত্রী আরও প্রশ্ন তোলেন যে কিছু দেশ আজ প্রকাশ্যে উচ্চ শুল্ক ঘোষণা করছে এবং এর কোনও বড় আপত্তি নেই, যেখানে এই ধরনের পদক্ষেপগুলি আগে সমালোচনা করা হয়েছিল।
তিনি এটিকে বিশ্ব বাণিজ্যের "নতুন স্বাভাবিক" বলে অভিহিত করেছেন। তার বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে বিবেচিত হয় কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ অনেক দেশের শুল্ক নীতি বিশ্ব বাণিজ্যের উপর প্রভাব ফেলছে। সম্প্রতি, মেক্সিকোর মতো দেশগুলি যেসব দেশের সাথে তাদের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নেই তাদের উপর উচ্চ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। এই পরিস্থিতিতে, ভারতের সতর্ক এবং ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্য নীতি তার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।

No comments:
Post a Comment