প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫:৫৯:০১ : পৃথিবীর মানচিত্র একটি বড় পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীদের মতে, আফ্রিকা মহাদেশের নীচে একটি ধীর কিন্তু বিপজ্জনক ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া চলছে যা আগামী কয়েক মিলিয়ন বছরের মধ্যে এটিকে দুটি ভাগে বিভক্ত করতে পারে। নতুন চৌম্বকীয় অনুসন্ধানগুলি প্রথমবারের মতো স্পষ্ট প্রমাণ প্রকাশ করেছে যে আফ্রিকার ভূমি ধীরে ধীরে কিন্তু অবিচলভাবে ফাটল ধরছে।
জার্নাল অফ আফ্রিকান আর্থ সায়েন্সেসে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে এই ফাটলটি উত্তর-পূর্ব থেকে দক্ষিণে প্রসারিত হচ্ছে, যেন একটি জ্যাকেটের জিপার খুলে ফেলা হচ্ছে। এই সময়ে, আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ, ভূমিকম্প এবং ভূত্বক প্রসারিত হওয়ার লক্ষণ পৃথিবীর নীচে ক্রমাগত দৃশ্যমান।
অনুমান করা হচ্ছে যে এই প্রক্রিয়াটি প্রায় ৫ মিলিয়ন থেকে ১০ মিলিয়ন বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ হবে এবং আফ্রিকা দুটি বৃহৎ অংশে বিভক্ত হবে: পশ্চিম আফ্রিকা - মিশর, আলজেরিয়া, নাইজেরিয়া, ঘানা, নামিবিয়া - এবং পূর্ব আফ্রিকা - সোমালিয়া, কেনিয়া, তানজানিয়া, মোজাম্বিক এবং ইথিওপিয়ার একটি বড় অংশ।
আফ্রিকার এই প্রধান ভূমিরূপ পরিবর্তনের কারণ হল বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত রিফ্ট সিস্টেম, পূর্ব আফ্রিকান রিফ্ট। এটি প্রায় ৪,০০০ মাইল লম্বা, ৩,০৪০ মাইল প্রশস্ত এবং জর্ডান থেকে মোজাম্বিক পর্যন্ত বিস্তৃত। এই রিফ্ট ধীরে ধীরে ভূমিকে ছিন্নভিন্ন করছে এবং বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে এটি অবশেষে মালাউই হ্রদ এবং তুর্কানা হ্রদের মতো বৃহৎ হ্রদগুলিকে বিভক্ত করবে।
গবেষকরা বিশেষ করে আফার অঞ্চলের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন, যেখানে লোহিত সাগর, এডেন উপসাগর এবং ইথিওপিয়ান রিফ্ট মিলিত হয়ে একটি ত্রিপল সংযোগ তৈরি করে। ভূগোলে, এখানেই মহাদেশগুলি প্রথমে ভেঙে যায়। এখানে সংগৃহীত চৌম্বকীয় তথ্য (১৯৬৮-৬৯) আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুনরায় পড়া হয়েছিল। পৃথিবীর চৌম্বকীয় বিপরীত স্তরগুলি পাওয়া গেছে, যা গাছের বয়সের বলয় বা বস্তুর বারকোডের মতো। এই চিহ্নগুলি ইঙ্গিত দেয় যে সমুদ্রতল একসময় আরব এবং আফ্রিকার মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল, নতুন ভূমি তৈরি করেছিল।

No comments:
Post a Comment