ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫: রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সাম্প্রতিক ভারত সফরের প্রতি চীন ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে ড্রাগন বলেছে যে, ভারত, চীন এবং রাশিয়ার মধ্যে একটি মজবুত ত্রিপক্ষীয় সম্পর্ক কেবল আঞ্চলিক নয় বরং বিশ্বব্যাপী স্থিতিশীলতা ও শান্তির জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বিবৃতি এমন এক সময়ে এসেছে যখন রাশিয়া-চীন সম্পর্ক ইতিমধ্যেই শক্তিশালী এবং ভারত-চীন সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের দিকে এগিয়ে চলেছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, চীন, ভারত এবং রাশিয়া উদীয়মান অর্থনীতি ও গ্লোবাল সাউথের গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বর। তিনি বলেন, এই তিনটি দেশের মধ্যে মজবুত এবং স্থায়ী সহযোগিতা কেবল তাদের জন্যই লাভজনক হবে না বরং বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা, উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধিতেও অবদান রাখবে। গুও বলেন, "দৃঢ় ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা বজায় রাখা সকল দেশের স্বার্থে এবং এশিয়া ও সমগ্র বিশ্বের স্থিতিশীলতার জন্য উপকারী হবে।"
২০২০ সালে পূর্ব লাদাখে উত্তেজনার পর থেকে ভারত-চীন সম্পর্ক শীতল হওয়ার ব্যাপারেও চীন ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছে। গুও জিয়াকুন বলেছেন যে, বেইজিং দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিকোণ থেকে ভারতের সাথে একটি স্বাভাবিক, স্থিতিশীল এবং মজবুত সম্পর্ক গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, "আমরা ভারতের সাথে কৌশলগতভাবে এবং দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিকোণ থেকে এই সম্পর্ক পরিচালনা করতে প্রস্তুত, যাতে উভয় দেশের জনগণ প্রকৃত সুবিধা পেতে পারে।"
বেইজিং রাশিয়া-ভারত সম্পর্কের গভীরতা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ভারত সফরের আগে এক সাক্ষাৎকারে পুতিন ভারত ও চীনকে রাশিয়ার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছেন যে, দুটি দেশ তাদের বিরোধ নিজেরাই সমাধান করতে পারে। এই বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় চীন, রাশিয়া ও ভারত উভয়ের সাথেই মজবুত দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়েছে। চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম পুতিনের বক্তব্য তুলে ধরেছে, যেখানে তিনি ভারতের রাশিয়ান তেল কেনার বিষয়ে মার্কিন সমালোচনাও প্রত্যাখ্যান করেছেন।
রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন ৪-৫ ডিসেম্বর সরকারি সফরে ভারতে এসেছিলেন। ২০২১ সালের পর এটি ছিল তাঁর প্রথম ভারত সফর। এই সফরে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি এবং বিনিয়োগ সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। দুই দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করে এবং একটি দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক সহযোগিতা কর্মসূচি অনুমোদন করে।


No comments:
Post a Comment