লাইফস্টাইল ডেস্ক, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫: আজকের দ্রুতগতির জীবনে, আমরা প্রায়শই চাপকে কেবল একটি মানসিক সমস্যা বলে মনে করি। কিন্তু সত্য হল মানসিক চাপ কেবল মনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি শরীরেও ছড়িয়ে পড়ে। পুষ্টিবিদ শ্বেতা শাহের মতে, যখন একজন মহিলা দীর্ঘস্থায়ী চাপ অনুভব করেন, তখন এর প্রভাব প্রথমে অন্ত্রে (পাচনতন্ত্র) এবং তারপরে হরমোন সিস্টেমের ওপর দেখা যায়। এই কারণেই পেট ফাঁপা, অ্যাসিডিটি, গ্যাস, অনিয়মিত মাসিক, বিলম্বিত চক্র বা ব্যথা বৃদ্ধির মতো লক্ষণগুলি সাধারণ হয়ে ওঠে।
মানসিক চাপের সময়, শরীরের কর্টিসল হরমোন বৃদ্ধি পায়। এই হরমোন শরীরকে "বেঁচে থাকার মোডে" রাখে, যেখানে হজম প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায় এবং প্রজনন হরমোন পিছিয়ে পড়ে। ফলস্বরূপ, হজম এবং ঋতুস্রাবের স্বাভাবিক ছন্দ ব্যাহত হয়। আয়ুর্বেদ এটিকে বাত দোষের বৃদ্ধির সাথেও যুক্ত করে, যা ব্যস্ত জীবনধারা, অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা এবং অনিয়মিত রুটিনের কারণে হয়। যদি চাপ নিয়ন্ত্রণ না করা হয়, তাহলে অন্ত্র এবং মাসিকের সমস্যা পুনরাবৃত্তি হতে পারে।
চাপ অন্ত্র এবং মাসিককে কীভাবে প্রভাবিত করে?
হজমের ঝপর প্রভাব: বর্ধিত চাপ হজমের আগুনকে দুর্বল করে দেয়, যার ফলে গ্যাস, পেট ফাঁপা এবং অ্যাসিডিটি হয়।
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: উচ্চ কর্টিসলের কারণে ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের মতো হরমোন ভারসাম্য হারাতে পারে, যার ফলে দেরিতে বা অনিয়মিত মাসিক হতে পারে।
পিরিয়ডের সময় খিঁচুনি এবং ব্যথা: চাপ পেশী শক্ত করে, পিরিয়ডের সময় ব্যথা এবং খিঁচুনি বৃদ্ধি করে।
আয়ুর্বেদিক দৃষ্টিকোণ: আয়ুর্বেদের মতে, অতিরিক্ত দৌড়াদৌড়ি, অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা এবং অনিয়মিত রুটিন বাত দোষের বৃদ্ধি করে, যার সরাসরি প্রভাব অন্ত্র এবং মাসিকের ওপর পড়ে।
কিভাবে হিলিং শুরু করবেন?
দিনের ছোটাছুটির গতি একটু ধীর করুন।
উষ্ণ, হালকা এবং তাজা খাবার খান।
খুব ঠাণ্ডা, প্রক্রিয়াজাত এবং জাঙ্ক খাবার খাওয়া কমিয়ে দিন।
রাতে পর্যাপ্ত এবং গভীর ঘুমান।
খাওয়ার আগে ৫-১০ মিনিট চুপচাপ বসে থাকুন বা গভীরভাবে শ্বাস নিন।
স্বাস্থ্য পরামর্শ: পুষ্টিবিদ শ্বেতা শাহ বলেন যে, যখন মন শান্ত থাকে, তখন অন্ত্র সুস্থ থাকে। আর অন্ত্র সুস্থ হয়ে গেলে, মাসিক স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়মিত হয়ে যায়। অতএব, মাসিকের সমস্যাগুলি কেবল ওষুধ দিয়েই নয়, জীবনধারা এবং মানসিক শান্তির মাধ্যমেও সমাধান করা যেতে পারে। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করাই আসল চিকিৎসার শুরু। আরও সুনির্দিষ্ট তথ্যের জন্য, একজন ডাক্তারের সাথে অবশ্যই পরামর্শ করুন।

No comments:
Post a Comment