পটল চিংড়ি, দই পটল, পটল মোরবা বা পটল পুর- এই সব শব্দ বাঙালির খুব প্রিয়। চাহিদা বেশি থাকায় পটলকে অর্থকরী ফসল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
পটল চাষের জন্য প্রয়োজনীয় জলবায়ু ও মাটি
পটল চাষে মাটি ও জমির অবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কমবেশি যে কোনও মাটিতে পটলের চাষ করা যায়, তবে দোআঁশ, নিষ্কাশন ব্যবস্থাসহ বেলে-দোআঁশ মাটি পটলের জন্য উপযোগী।
নদীর চড়ের পলি পটল চাষের জন্য খুবই ভালো। সেচের প্রয়োজন হয় না কারণ গভীর শিকড় মাটির নিচ থেকে জল নিতে পারে। কিন্তু বর্ষাকালে গাছপালা জলে তলিয়ে যাওয়ায় ফসল বেশিদিন টেকে না।
এঁটেল, লাল ও বেলে মাটি পর্যাপ্ত পরিমাণে জৈব সার মিশিয়ে পটল চাষের উপযোগী করতে হবে।
পটল সামান্য লবণাক্ত মাটি এবং জল সহ্য করতে পারে।
চাষযোগ্য জমি মাঝারি থেকে উঁচু হতে হবে। জমিতে জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
কৃষি মৌসুম
চারা রোপণের উপযুক্ত সময় সাধারণত অক্টোবর থেকে নভেম্বর। এজন্য অক্টোবরের আগে জমি প্রস্তুত করতে হবে।
পলিব্যাগে পটল গাছ তৈরি করা যায়। পলিব্যাগে শাখা কলমও রাখা যেতে পারে। এতে জন্মানো গাছে চারার আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পায় এবং ফলনও ভালো হয়।
জমি প্রস্তুত
ভালো ফলন পেতে হলে জমিতে ৪ থেকে ৫টি লাঙল ও মই দিতে হয়, মাটি ভালোভাবে চাষ করতে হয় এবং উপরের মাটি সমতল করতে হবে।
চারা রোপণ
পটল সাধারণত ক্ষেতে চাষ করলে এর ফলন সবচেয়ে ভালো হয়। এই ক্ষেত্রে প্রতিটি বিছানা 1-1.5 মিটার চওড়া। এক ক্ষেত থেকে অন্য ক্ষেতের মধ্যে ড্রেনেজ তৈরি করতে হবে।
সার প্রয়োগ
ভালো ফলন পেতে হলে জমিতে প্রয়োজনীয় পরিমাণ সার প্রয়োগ করতে হবে। পটল চাষের জন্য প্রয়োজন হবে 1 কেজি গোবর, 250 গ্রাম তেল, 100 গ্রাম ইউরিয়া, 160 গ্রাম টিএসপি, 130 গ্রাম এমওপি এবং 150 গ্রাম জিপসাম।
এই সব সার রোপণের সময় ব্যবহার করতে হবে। ফুল ফোটা কম হলে 500 গ্রাম গোবর, 60 গ্রাম ইউরিয়া, 90 গ্রাম টিএসপি, 100 গ্রাম এমওপি দিতে হবে। তাহলে গাছের ফলন বাড়বে। সার প্রয়োগের পর জল সেচ দিতে হবে।
মাচা তৈরি
পটল চাষের জন্য জমিতে মাচা তৈরি করা হলে ফলন খুব ভালো হয়। যেহেতু পটল একটি লতা উদ্ভিদ, যদি এটি মাটিতে বৃদ্ধি পায় তবে সাদা পাতা বা হলুদ দাগ দেখা যায়। ফলে বাজারে দাম ধীরে ধীরে কমতে থাকে। তাই পটল চাষে বাঁশ বা দড়ি দিয়ে মাচা তৈরি করতে হবে।
ফসল কাটা
পটল সাধারণত অল্প বয়সে সংগ্রহ করা হয়। সকালে বা বিকেলে সংগ্রহ করা ভালো। 10-12 দিনের মধ্যে ফুল সংগ্রহের উপযোগী হয়।
No comments:
Post a Comment