মথুরা শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি বিতর্কে এলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দিয়েছে। এই ক্ষেত্রে, এলাহাবাদ হাইকোর্ট মথুরা আদালতকে মূল মামলা সংক্রান্ত সমস্ত আবেদন চার মাসের মধ্যে দ্রুত নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি, হাইকোর্ট সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড এবং অন্যান্য পক্ষকে শুনানিতে উপস্থিত না হওয়ার জন্য একদলীয় আদেশ জারি করার নির্দেশ দিয়েছে।
ভগবান শ্রী কৃষ্ণের বিরাজমানের পর মিত্র মনীশ যাদবের আবেদনের ওপর শুনানি করে এলাহাবাদ হাইকোর্ট এই রায় দিয়েছে। বিচারপতি সলিল কুমার রাইয়ের একক বেঞ্চে শুনানি হয়।
উল্লেখ্য, জন্মভূমি বিরোধ সংক্রান্ত সমস্ত মামলার শুনানি শেষ করে দ্রুত নিষ্পত্তি করার দাবীতে মথুরার আদালতে এই আবেদনটি দায়ের করা হয়েছিল। এর পাশাপাশি মথুরার আদালতে চলমান সমস্ত মামলাকে একত্রিত করে শুনানির দাবী জানানো হয়েছিল।
মথুরার শ্রী কৃষ্ণ জন্মভূমি প্রাঙ্গণে নির্মিত মন্দিরের পাশেই দাঁড়িয়ে আছে, ইদগাহ মসজিদ। আদালতে বলা হয়েছে, যে জায়গায় এই ইদগাহ মসজিদ তৈরি করা হয়েছে সেটি কংসের কারাগার, যেখানে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল। ১৬৬৮-৭০ সালে, মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব শ্রী কৃষ্ণ জন্মভূমির স্থানে নির্মিত মন্দিরটি ভেঙে সেখানে এই ইদগাহ মসজিদটি নির্মাণ করেন। বর্তমানে বিষয়টি আবারও আদালতে পৌঁছেছে। হিন্দু দলগুলো দাবী করেছে, এই মসজিদ কমপ্লেক্সের জরিপের জন্য একটি দল গঠন করা উচিৎ, যারা এই মসজিদ প্রাঙ্গণে হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি ও নিদর্শন রয়েছে কিনা তা পরিদর্শন করে জানাবে, যা থেকে বোঝা যাবে যে, এই মসজিদটির আগে এখানে একটি হিন্দু মন্দির ছিল।
তবে ইদগাহ মসজিদের সেক্রেটারি ও পেশায় আইনজীবী তানভীর আহমেদের মতে, যারা মসজিদকে মন্দিরের অংশ বলছেন, তারা বিকৃত করে বাস্তবতা তুলে ধরছেন। কারণ ইতিহাসে এমন কোনও তথ্য নেই, যা থেকে বোঝা যায় যে মন্দির ভেঙে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে বা যে স্থানে বিদ্যমান ইদগাহ মসজিদটি নির্মিত হয়েছে সেখানেই শ্রী কৃষ্ণের জন্ম হয়েছে।
আরেকটি যুক্তি যা মুসলিম পক্ষ থেকে আদালতে প্রধানভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে তা হল, ১৯৯১ সালের ওয়ার্কশিপ অ্যাক্ট। মুসলিম পক্ষের মতে, এই আইনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, ১৯৪৭ সালের আগে ধর্মীয় স্থানগুলির বিষয়ে দেশে যে পরিস্থিতি ছিল সেভাবেই বজায় রাখা হবে এবং এতে কোনও ছেঁড়ছাড় করা হবে না। তবে রামজন্মভূমির বিরোধ ছিল এর ব্যতিক্রম।
অন্যদিকে হিন্দু পক্ষ ও আইনজীবীরা এই যুক্তির বিরোধিতা করে বলছেন, হঠাৎ করে এই মামলা করা হয়েছে, তা নয়। ওয়ার্কশিপ অ্যাক্টে এটাও বলা হয়েছে যে, কোনও মামলায় যদি ক্রমাগত মামলা চলতে থাকে বা আদালতে বিচারাধীন থাকে, তাহলে সেই মামলা ১৯৯১ সালের ওয়ার্কশিপ অ্যাক্টের আওতায় আসবে না।'
No comments:
Post a Comment