কলকাতার সব থেকে পুরোনো পারিবারিক পুজো সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের দুর্গা পুজো। স্ত্রী ভগবতী দেবীর ইচ্ছায় জমিদার লক্ষ্মীকান্ত মজুমদার প্রথম আটচালার দুর্গা প্রতিমার পুজো শুরু করেন ১৬১০ সালে। এই পরিবার মোট ৮ টি আলাদা-আলাদা প্রতিমার পুজো করে থাকেন। এই প্রতিমা কিছুটা লাল রঙের বা হালকা সোনালী রঙের হয়ে থাকে।
দশমহাবিদ্যা দ্বারা প্রভাবিত মা দুর্গার বিভিন্ন রূপের পূজা করা হয়। অসুরের রং সবুজ রঙের হয়। সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের দুর্গা পূজা বিদ্যাপতি রচিত দুর্গাভক্তিতরঙ্গিনীতে উক্ত নিয়ম বা রীতি মেনে সম্পন্ন হয়। প্রথমে এই পুজোটি বরিশার জমিদার বাড়িতে চণ্ডীমণ্ডপে হতো। পরবর্তী কালে সকলেই যাতে এই পুজোর অংশ হয়ে উঠতে পারেন, সেই কারণে মোট আটটি পুজো শুরু করা হয়।
এর মধ্যে শুধু বরিশাতেই ৬ টি পুজো হয়। সেগুলি যথাক্রমে আটচালা বাড়ি পুজো, বড় বাড়ি পুজো, বেনাকি বাড়ি পুজো, মেজো বাড়ি পুজো ,কালীকিঙ্কর ভবন পুজো এবং মাঝের বাড়ি পুজো। সপ্তম পুজোটি হয় বিরাটিতে বিরতি বাড়ি পুজো এবং অষ্টম পুজোটি নিমতাতে নিমতা পাঠানপুর বাড়ি পুজো নামে প্রসিদ্ধ।
এই পরিবারের দূর্গা পুজো যেরকম রীতি মেনে সম্পন্ন হয়, তাতে যোগিনী এবং উপদেবতারাও মহাসপ্তমী ও মহাষ্টমীতে পূজিত হন। শাক্ত-শৈব এবং বৈষ্ণব এই তিন ধারারই প্রভাব এই পুজোয় দেখা যায়। সেই জন্য এই পুজোর মহিমা বাকি সব পুজোর থেকে আলাদা। এই পুজোটি প্রতি বছরই সমস্ত রকম রীতি মেনে সম্পন্ন হয়। সপ্তমী থেকে দশমী ১৮ টি ভাগে মা দুর্গাকে অন্নভোগ নিবেদন করা হয়। ভোগ রান্না করতে হয় মুখে কাপড় বেঁধে।
No comments:
Post a Comment