গণেশকে বাম এবং কার্ত্তিককে ডান দিকে রেখে দুর্গা তৈরী করা হয়। আর এভাবেই বছরের পর বছর পুজো হয়ে আসছে ইলামবাজারের দালাল পাড়ার দালাল বাড়িতে। কথিত আছে, একদিন ভোরে দালাল বাড়ির এক বৌ দুর্গা মন্দিরে মারুলি দিতে এসে দেখে মন্দির চত্বরে দুটি বাচ্চা ছেলে খেলা করছে। বাচ্চাদের পড়নে দেবতাদের মত পোশাক। এত ভোরে দুটি ছোট বাচ্চাকে খেলা করতে দেখে অবাক চোখে কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই বাচ্চা দুটি মন্দিরে ঢুকে যায়। মন্দিরে ঢুকে গৃহবধূ দেখেন গণেশ দাঁড়িয়ে রয়েছে বাম দিকে আর কার্তিক রয়েছে ডান দিকে। সেই থেকে দালাল বাড়িতে প্রতি বছর গণেশকে বাম এবং কার্তিককে ডান দিকে রেখে দুর্গা তৈরী করা হয়।
একটা সময় এই সম্ভ্রান্ত পরিবারের পৈতৃক গালার ব্যবসা ছিল। ব্যবসার কারণে তাদের প্রায় কলকাতা যেতে হত। বাড়ির পাশেই মাটির মন্দিরে প্রতি বছর মা দুর্গার পুজো হত, বর্তমানে সেই মাটির মন্দির এখন পাকা হয়েছে। ৬০০ বছরের বেশি এই পুজোয় আড়ম্বরের কোন অভাব থাকে না। প্রতি বছর মহলয়ার আনেক আগেই দুর্গা মূর্তি তৈরী শুরু হয়ে যায়। এক চালা ডাকের সাজে মা দুর্গাকে সাজানো হয়। পুজো শুরু হয় ষষ্টির দিন, সে দিন ঘট ভরে পুজো শুরু হয়।
সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমীতে পাঁঠা বলি দেওয়া হয়। অষ্টমীর দিন শুধু মাত্র সাদা পাঁঠা বলি দেওয়া হয়। সাদা পাঠা বলি দেওয়ার পিছনে রয়েছে কারন। দালাল পরিবার সূত্রে জানা যায়, কয়েকশো বছর আগে বাড়ির গুরুদেব বিধান দিয়ে ছিলেন পাঁঠা বলি না করার । কিন্তু পুজোর দুদিন আগে গুরুদেব কে মা দুর্গা স্বপ্ন দেন বলি বন্ধ কর যাবে না, আর এর পরেই গুরুদেব সুদূর মুলুক থেকে পৌঁছে যান দালাল বাড়িতে।
শেষ মুহূর্তে পাঁঠা খুঁজে বলি দেওয়া হয়, সেই সময় অষ্টমীর দিন বলি দেওয়া হয় সাদা পাঁঠা, তার পর থেকেই সাদা পাঁঠা বলি দেওয়ার রীতি প্রচলিত হয়। দশমীর দিন হয় কুমারী পুজো, স্থানীয় ব্রাহ্মনদের কুমারী মেয়েরা এই সুযোগ পেয়ে থাকে। এই পুজো শেষে দশমীর দিন সন্ধ্যায় প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়ে থাকে।
No comments:
Post a Comment