রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে অখিল গিরির বিতর্কিত বক্তব্যে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। নিন্দার ঝড় উঠেছে দেশ জুড়ে। এরই মাঝে ফের একবার জঙ্গলমহল সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী মঙ্গলবার অর্থাৎ ১৫ নভেম্বর বিরসা মুণ্ডার জন্মদিনে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ির সাহারিতে যাচ্ছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে জোর তৎপরতা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সপ্তাহে রাস উৎসবের সময় নদিয়া গিয়েছিলেন। প্রশাসনিক বৈঠকের পাশাপাশি তিনি সেখানে জনসভাও করেন। এর ঠিক পরের সপ্তাহেই তিনি ঝাড়গ্রামে যাচ্ছেন। উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে অখিল গিরির বক্তব্যের পরে, বিজেপি ক্রমাগত তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করছে এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আদিবাসী বিরোধী বলেছে।
সূত্রের খবর, বেলপাহাড়ির কাছে কুচলাপাহাড়ির ফুটবল গ্রাউন্ডে একটি বিশাল প্যান্ডেল তৈরি করা হচ্ছে, যার পাশে একটি হেলিপ্যাড রয়েছে। দুপুর আড়াইটার দিকে সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক হবে। শনিবার, দলীয় নেতৃত্ব মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন প্রশাসনিক আধিকারিক এবং নিরাপত্তা কর্মীদের সাথে এলাকা পরিদর্শন করেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মাওবাদীদের ঘাঁটি বলা বেলপাহাড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বৈঠকের দিন মুখ্যমন্ত্রী অনেকের হাতে পাট্টার তুলে দেবেন। শিল্পীদের মুণ্ডা ধামসা ও মাদল দেওয়া হবে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার হেলিকপ্টারে করে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়িতে আসবেন তিনি। বৈঠকের পর তিনি সড়কপথে ঝাড়গ্রামে এসে সেখানে সরকারি গেস্ট হাউসে রাত কাটাবেন। প্রসঙ্গত, এই বছরের মে মাসে মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়গ্রামে একটি প্রশাসনিক বৈঠক করেছিলেন। তবে এবার তিনি বলেছেন যে, তিনি আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতা বিরসা মুণ্ডার জন্মদিনে যোগ দিতে ঝাড়গ্রামে যাচ্ছেন।
মুখ্যমন্ত্রী এই সপ্তাহে নদিয়া গিয়েছিলেন। একদিকে, যেমন তিনি তার বৈঠকে সিপিএম, বিজেপি এবং কংগ্রেসকে আক্রমণ করার পাশাপাশি সিএএ সহ অনেক বিষয়ে সুর চড়ান, তেমনই তিনি মতুয়া ভোটেও শান দেন। তিনি বলেন, “রাজবংশীরা এখানকার নাগরিক। উদ্বাস্তুরা এখানকার নাগরিক, আদিবাসীরা এখানকার নাগরিক। সংখ্যালঘুরা এখানকার নাগরিক। আপনারা যদি নাগরিক না হন, তবে আমিও নাগরিক নই।"
এরপরেই জঙ্গলমহলে মমতা। ফলত পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে মুখ্যমন্ত্রীর নজর যে, আদিবাসী ভোটব্যাঙ্কের দিকে এবং এদিকে রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে মন্ত্রী অখিল গিরির বক্তব্যের পরে তিনি যে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করবেন, সেকথাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
No comments:
Post a Comment