উত্তর ২৪ পরগনা: 'যতই ব্যবস্থা নেওয়া হোক না কেন তৃণমূল ঠিক চুরির পথ বার করে নেয়', এভাবেই রাজ্যের শাসক দলকে নিশানা করলেন বাম নেতা শতরূপ ঘোষ। বুধবার বারাসতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে একথা বলেন তিনি।
'চোর তাড়াও, সাম্প্রদায়িক শক্তি হঠাও, বাংলা বাঁচাও'- এই দাবীকে সামনে রেখে বুধবার বারাসত ব্লক১ অফিসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে CPI(M)এর।ভারতে কমিউনিস্ট পার্টি(মার্কসবাদী)বারাসত ১নং ব্লল কমিটির ডাকে এদিন ছিল বিডিও অফিস অভিযান। তাদের দাবী, তৃণমূলের সীমাহীন দুর্নীতি, লুট স্বজন-পোষণের প্রতিবাদে এবং সাম্প্রদায়িক বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে লুঠের পঞ্চায়েত উৎখাত করে মানুষের পঞ্চায়েত গঠনের আহ্বানে এই বিক্ষোভ সমাবেশ। এদিন বারাসত ব্লক ১ অফিসের সামনে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন বামেরা। সভা মঞ্চ থেকে রাজ্যের শাসক দলকে একাধিক ইস্যুতে নিশানা করেন শতরূপ।
পরবর্তীতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, 'তৃণমূল আমাদের এই যোগ্যতা দেখিয়েছে, যতই ব্যবস্থা নেওয়া হোক না কেন ওরা ঠিক কোনও না কোনও ভাবে চুরির পথ বার করে নেয়।' উল্লেখ্য, ১০০ দিনের কাজ অ্যাপের মাধ্যমে- এমন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কেন্দ্র- এই নিয়েই এমন মন্তব্য করেন বাম নেতা।
তিনি আরও বলেন, 'বাম আমলে এতদিন ১০০ দিনের কাজ ম্যানুয়ালি হত, কোনও দিন দুর্নীতির অভিযোগ কেউ করতে পারেনি, এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও না।' এরপরেই তোপ দেগে শতরূপ বলেন, 'যে মাথায় বসে আছে সে যদি চোর হয়, চুরি করাটাই যদি তাদের একমাত্র কাজ হয়ে থাকে, তাহলে অ্যাপের মাধ্যমে হলেও চুরি হবেই। তাই পদ্ধতি পাল্টে হবে না, এঈ সরকারকে পাল্টাতে হবে।'
নিয়োগ দুর্নীতি ও অনুব্রত ইস্যুতেও এদিন সুর চড়িয়েছেন বাম নেতা। পার্থ ঘনিষ্ঠ কর্মীদের নিজাম প্যালেসে তলব করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তদন্তের জন্য যাকে প্রয়োজন তাকেই তলব করা হোক। শুধু পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির কর্মী না, তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা এলাকায় এলাকায় এর সঙ্গে যুক্ত।' তৃণমূল কর্মীরা গোটা বাংলা জুড়ে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ তৃণমূলের ব্রাঞ্চ খুলে এই টাকাগুলো সংগ্ৰহ করেছে, সেই তৃণমূল কর্মীদের তলব করতে হবে এবং প্রয়োজনে তাদের গ্রেফতার করতে হবে, এমনই দাবী করেন বাম নেতা।
অনুব্রত প্রসঙ্গে শতরূপ বলেন, 'তৃণমূল চাইবে অনুব্রত মণ্ডলকে পশ্চিমবাংলার জেলে রাখতে। অনুব্রতর ইন্ধনে এতদিন অনেক কিছু হয়েছে, তার নামে অনেক মামলা আছে, এতদিন কিছু হয়নি। আর আদালত যখন তিহার নিয়ে যেতে রায় দিল, অনুব্রতকে একটা মামলায় ডিটেইন করে নিল। তাই তৃণমূল মুখে যতই বলুক, ব্যক্তির দুর্নীতি তার নিজের দুর্নীতি, এর সঙ্গে দলের বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও সম্পর্ক নেই; মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে গোটা তৃণমূল কংগ্রেস- এটা তাদের দলীয় দুর্নীতি। তাই গোটা দল গোটা সরকার মিলে একটা চোরকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে।'
উল্লেখ্য, এদিন বামেদের বিক্ষোভ সমাবেশ ও বিডিও অফিস অভিযান ঘিরে মোতায়েন করা হয় দত্তপুকুর থানার পুলিশ বাহিনী। পরবর্তীতে CPI(M)কর্মী সমর্থকরা বিডিও অফিসে ঢুকতে গেলে পুলিশের বাঁধার মুখে পরেন, শুরু হয় বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশের ধস্তাধস্তি। চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় বারাসত ব্লক ১ বিডিও অফিস চত্ত্বরে।
No comments:
Post a Comment