যদি আপনাকে প্রশ্ন করা হয় মাথা কেটে ফেলার পর কোনো ব্যক্তি বা প্রাণী বেঁচে থাকতে পারে কি না? আপনার উত্তর হবে 'অবশ্যই না', তবে বিশ্বাস করুন যদি আমরা আপনাকে বলি যে, হ্যাঁ !
তবে মাথা কাটা এক মুরগি করেছে কামাল। জানা গেছে এই মাথা কাটা মুরগি ১৮মাস এ অবস্থায় বেঁচে ছিল। প্রায় ৭২ বছর আগে এমনই এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছিল আমেরিকায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই বিস্ময়কর ঘটনার সম্পর্কে -
প্রকৃতপক্ষে, ১০ই সেপ্টেম্বর, ১৯৪৫সালে, কলোরাডোর ফ্রুইটাতে বসবাসকারী কৃষক লয়েড ওলসেন এবং তার স্ত্রী ক্লারা তাদের খামারে মুরগি কাটেন। লয়েড, মাইক নামে একটি সাড়ে পাঁচ মাস বয়সী মুরগির শিরশ্ছেদ করেন, কিন্তু তিনি দেখতে পান মাইক মারা যায়নি বরং মাথা ছাড়াই দৌড়ে বেড়াচ্ছিল। তিনি তখন সেই মাথাবিহীন মুরগিটিকে একটি বাক্সে তালাবদ্ধ করে রাখেন।কিন্তু পরের দিন সকালে যখন তিনি ঘুম থেকে ওঠেন, তখনও তিনি দেখতে পারেন ওই মুরগি বেঁচে আছে।
এই মুন্ডচ্ছেদ মুরগির জীবিত থাকার খবর ধীরে ধীরে পুরো ফ্রুটাসহ আমেরিকার অনেক শহরে ছড়িয়ে পড়ে। এই মুরগির নাম দেওয়া হয়েছিল 'মিরাকল মাইক'।
সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুসারে, মাইককে সে সময় ফোঁটা ফোঁটা রস দেওয়া হয়েছিল এবং তার খাবারের পাইপ সিরিঞ্জ দিয়ে পরিষ্কার করা হয়েছিল যাতে সে দম বন্ধ করতে না পারে।
১৯৪৭ সালের মার্চ মাসে মাইক মারা যায়। এর মৃত্যুর কারণ বলা হয় যে লয়েড ওলসেন তাকে রস দেওয়ার পর সিরিঞ্জ দিয়ে তার খাবারের পাইপ পরিষ্কার করেননি, যার কারণে দম বন্ধ হয়ে মারা যায়।
কথিত আছে, 'মিরাকল মাইক'-এর খ্যাতি এতটাই বেশি ছিল যে লয়েড ওলসেন এটি দেখার জন্য টিকিটও বুক করেছিলেন। সে সময় মাইক দেখতে আসা দর্শকদের কাছ থেকে প্রতি মাসে প্রায় তিন লক্ষ ২০ হাজার টাকার সমান পেতেন।
বিবিসির এক প্রতিবেদন অনুসারে, নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর বিহেভিয়ার অ্যান্ড ইভোলিউশনের সঙ্গে যুক্ত মুরগির বিশেষজ্ঞ ডঃ টম স্মল্ডার্স বলেছেন যে মুরগির পুরো মাথাটি চোখের কঙ্কালের পিছনে একটি ছোট অংশে অবস্থিত।
মাইকের ঠোঁট, মুখ এবং চোখ সরানো হয়েছে বলে জানা গেছে, কিন্তু স্মল্ডারস অনুমান করেছেন যে মাইকের মস্তিষ্কের ৮০ শতাংশ সংরক্ষিত ছিল।
No comments:
Post a Comment