অক্সিজেন প্লান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত ছয়জন নিহত ও ৩০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে, বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার কদম রসুল (কেশবপুর) এলাকায় শনিবার বিকেলে। স্থানীয়রা জানান, অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের প্রভাব এমন ছিল যে এতে দুই বর্গ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের ভবনগুলিও কেঁপে ওঠে। শুধু তাই নয়, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রচণ্ড বিস্ফোরণের পর কারখানার বিভিন্ন বস্তু প্ল্যান্ট থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে ছিটকে পড়ে।
এই দুর্ঘটনায়, অক্সিজেন প্ল্যান্টে থাকা পাঁচজনের এবং সেখানে থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে কদম রসুল বাজারে নিজের দোকানে বসে থাকা ৬৫ বছর বয়সী শামছুল আলমের গায়ে ধাতব বস্তু পড়ে মৃত্যু হয়। আলমের ভাই মাওলানা ওবায়দুল মুস্তফা সংবাদমাধ্যমকে জানান, বিস্ফোরণের পর আড়াইশো থেকে ৩০০ কেজি ওজনের একটি ধাতব বস্তু তার ওপর পড়ে এবং ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
মাদামবীর হাটের বাসিন্দা রাদওয়ানুল হক জানান, বিস্ফোরণের পর কদমরসুল এলাকা থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখে কারখানায় যান তিনি। তিনি কমপক্ষে ১২ কারখানার শ্রমিককে প্ল্যান্ট থেকে বের করে নিয়ে যেতে দেখেছেন। কাছাকাছি একটি তৈরি পোশাক কারখানার একজন কর্মী জানান, তিনি একটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন, যা কারখানার জানালার কাঁচ ভেঙে যাওয়ার। ওই শ্রমিক জানান, কাঁচের টুকরো তার গায়ে পড়ে এবং তিনি আহত হয়।
কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র অফিসার সুলতান মাহমুদ জানান, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে অক্সিজেন প্লান্টে আগুন লাগে। খবর পেয়ে সীতাকুণ্ড ও কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের নয়টি দমকলের ইঞ্জিন যৌথভাবে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। এক ঘন্টারও বেশি সময় লেগেছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে।
কী কারণে বিস্ফোরণ ঘটেছে তা এখনও নিশ্চিত করতে পারেননি দমকল কর্মীরা। এ বিষয়ে হাসপাতাল পুলিশ চৌকির ইনচার্জ নুরুল আলম আসহাক জানান, বিস্ফোরণে আহত প্রায় ২৫ জনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অক্সিজেন প্লান্টে বিস্ফোরণে নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত বছর ৪ জুন বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যসহ ৫১ জন নিহত এবং ২০০ জনের বেশি আহত হয়।
No comments:
Post a Comment