চৈত্রের শেষেই তীব্র দাবদাহে পুড়ছে বাংলা। তবে সেই কষ্ট ভুলিয়ে দিতে শতভাগ উপকারি ফলের রাজা। কিন্তু সেই ফলের রাজার রাজ্য থেকেই কি না এল খারাপ খবর! একে তো প্রচণ্ড গরম, তার ওপর দয়ে বা দুধিয়া পোকার আক্রমণে ঝড়ে যাচ্ছে আম। মাথায় হাত মালদার আম-চাষীদের। উল্লেখ্য, এই গুটি গুটি সাদা পোকা আমের বোঁটায় গিয়ে সব রস চুষে নেয়, যাতে করে ঝড়ে যায় আম।
গত কয়েকদিনের তীব্র দাবদহের ফলে এই দয়ে পোকার উপদ্রব বেড়েছে। আর যে কারণে মালদার অর্থকারী ফসল আম ক্ষতির মুখে। চিন্তিত মালদা জেলা উদ্যানপালন ও বাগিচা দফতরের আধিকারিকেরা। জরুরী ভিত্তিতে এই পোকা উপদ্রব কমাতে আম-চাষীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
মালদা জেলাতে ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়। এই বছর চার লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। কিন্তু দয়ে পোকা আক্রমণের ফলে আম উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা জেলা উদ্যান পালন ও বাগিচা দফতরের কর্তারা আশা করেছিলেন তাতে ভাটা পড়তে পারে এমনই আশঙ্কা করছেন তারা।
এই বছরের শুরুতে আম উৎপাদনে অনুকুল আবহাওয়ার ফলে চাষী থেকে ব্যবসায়ী সকলেই খুশি ছিলেন। সময়ের আগেই মালদার আম-বাগান মুকুলে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। আমজনতাও মালদার আমের স্বাদ অল্প খরচে পাবেন, এমন আশা করেছিলেন। কিন্তু গত কয়েকদিনের তীব্র দাবদহ কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে সকলের।
আম চাষী রতন ঘোষ জানাচ্ছেন, যেহারে এই পোকার উপদ্রব বেড়েছে, তাতে আমকে বাঁচিয়ে রাখা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঋণ নিয়ে আম চাষ করেছিলেন। তিনি বলেন, 'প্রথমে মুকুল ভালো হওয়ায় আশা করেছিলাম, এবার হয়তো ফলন ভালো হবে। দুই পয়সার মুখ দেখব। আজ হতাশ। রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন, দ্রুত এই পোকার উপদ্রব থেকে আম রক্ষা করার ব্যবস্থা করা হোক।'
জেলা উদ্যান পালন বাগিচা দফতরের আধিকারিক সামন্ত লায়েক বলেন, 'পোকার উপদ্রব শুরু হয়েছে। তীব্র দাবদহও চলছে।' এই সময় সংবেদনশীল পোকা মারার কীটনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়াও নিম তেল জাতীয় জিনিস জলে মিশিয়ে স্প্রে করলে এই দয়ে পোকা উপদ্রব কমে যাবে, বলেও জানান।
No comments:
Post a Comment