কানে ব্যথা একটি সাধারণ বিষয়। কিন্তু যদি সঠিক সময়ে সঠিকভাবে চিকিৎসা না করা হয় তবে এটি একটি মারাত্মক রোগের রূপ নেয়। এতে শুধু অসহ্য যন্ত্রণাই হয় না, সেই সঙ্গে বধির হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়। ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের কারণে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। তাই প্রত্যেক অভিভাবকের উচিৎ তাদের সন্তানদের সমস্যা সম্পর্কে সাবধান ও সতর্ক হওয়া। আজ আমরা এমন কিছু ঘরোয়া উপায় বলতে যাচ্ছি যা শিশুদের কানের ব্যথার পাশাপাশি কানের সংক্রমণ থেকেও মুক্তি দেবে।
কানের ব্যথার ঘরোয়া প্রতিকার :
স্তন্যপানের সময় যত্ন নিন -
শুয়ে থাকা অবস্থায় একজন মা তার শিশুকে স্তন্যপান করালে কানে ব্যাথার ঝুঁকি দ্বিগুণ হয়ে যায়। অতএব, যখনই আপনি আপনার শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াবেন, তখন শিশুর মাথা আপনার বুকের চেয়ে উঁচুতে বা ৪৫ ডিগ্রি কোণে রাখতে হবে। আপনি যদি বোতলে দুধ পান করান, তবে সবসময় মাথা উঁচু করে তবেই শিশুকে বোতলটি দিন। এর ফলে শিশুদের কানে ব্যথার সমস্যা হবে না।
কানে সেঁক দিন -
কানে ইনফেকশনের কারণে খুব বেশি ব্যথা হলে শিশুদের কানে সেঁক করা উচিৎ । এর জন্য একটি সুতির কাপড় সামান্য গরম করে শিশুর কানে ধীরে ধীরে রাখুন। এটি শিশুদের কানের ব্যথা থেকে কিছুটা উপশম দেবে।
স্নানের পর কান পরিষ্কার করুন -
শিশুর উভয় কান স্নানের পর হালকা হাতে মুছে শুকিয়ে নিন। এতে ফাঙ্গাস হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। স্নানের পরপরই এটি করুন, কারণ এতে শিশুদের কান সহজে পরিষ্কার হবে এবং তাদের ব্যথার কোনো অভিযোগ থাকবে না।
শিশুদের কান পরিষ্কার করার উপায় -
পরিষ্কার ও শুকিয়ে যাওয়ার পরেও যদি কানে মোম বা ময়লা জমে থাকে, তাহলে সূক্ষ্ম বস্তু দিয়ে তা অপসারণের চেষ্টা করবেন না।
গরম তেল দিয়ে ম্যাসাজ করুন -
যদি শিশুর কান থেকে কোনও তরল বের না হয়, তাহলে হালকা গরম তেল দিয়ে কানে মালিশ করতে পারেন। এটি শিশুকে কানের ব্যথা থেকে কিছুটা উপশম দেবে। খেয়াল রাখবেন কানে বেশি তেল দেবেন না।
তুলসী পাতা -
তুলসী পাতা পিষে এর রস কয়েক ফোঁটা কানে দিন। কানে ক্ষত হলে সেখানেও কাজ করবে এই ঘরোয়া উপায়। তুলসীর রস দিনে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করলে কানের ব্যথা দূর হয়।
রসুন -
রসুনে রয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য যা সংক্রমণ দূর করতে খুবই কার্যকরী। রসুনের ২ থেকে ৩ টি কোয়া পিষে সরিষার তেলে গরম করুন, তারপর ঠান্ডা হলে এই তেলটি ছেঁকে নিন। এবার এই তেলের ২ থেকে ৩ ফোঁটা শিশুর কানে দিন। আপনি রসুন পিষে সরাসরিও এর রস কানে দিতে পারেন। এই দেশি রেসিপিটি বেশিরভাগ বাড়িতেই অনুসরণ করা হয়।
নিম পাতার রস -
নিমের তেল কানের ব্যথায় আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে। প্রসঙ্গত, নিমের সব কিছুই অনেক রোগে উপকারী, তবে এখানে এর পাতার রস ২ থেকে ৩ ফোঁটা কানে দিলে আরাম পাওয়া যায়। এর ফলে কানের ইনফেকশন ও ব্যথাও চলে যায়। শুধুমাত্র ডাক্তারের পরামর্শে এই ঘরোয়া প্রতিকারটি করুন।
জলপাই তেল -
কানের ব্যথার চিকিৎসায় অলিভ অয়েল একটি প্যানেসিয়া। কানে সামান্য ফোলাভাব দেখা দিলে অলিভ অয়েল একটু গরম করে ২ থেকে ৩ ফোঁটা দিন। আপনি জলপাই তেলের পরিবর্তে সরিষার তেলও ব্যবহার করতে পারেন।
আদা পেস্ট -
কানের ব্যথা উপশমের জন্য এটি একটি উপযুক্ত ওষুধ। আদা পিষে অলিভ অয়েলে রেখে সামান্য গরম করে ঠাণ্ডা করে ছেঁকে নিন। শিশুর কানে ২ থেকে ৩ ফোঁটা দিলে কানে চুলকানি, ব্যথা এবং ঝিঁঝিঁ ধরা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
বি.দ্র: এখানে দেওয়া তথ্য সাধারণ জ্ঞান ও ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে দেওয়া। প্রেসকার্ড নিউজ এটি নিশ্চিত করে না। কোনও নতুন কিছু শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞর পরামর্শ অবশ্যই নিন।
No comments:
Post a Comment