নেই ঘোষণা, নেই জল ও খাবার! যাত্রী বিক্ষোভে উত্তাল শিয়ালদা স্টেশন - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Sunday 9 June 2024

নেই ঘোষণা, নেই জল ও খাবার! যাত্রী বিক্ষোভে উত্তাল শিয়ালদা স্টেশন


নেই ঘোষণা, নেই জল ও খাবার! যাত্রী বিক্ষোভে উত্তাল শিয়ালদা স্টেশন



নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা, ০৯ জুন: পূর্ব ঘোষণা মত আজ রবিবার দুপুর দু্টো নাগাদ শিয়ালদায় কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু চারশো জন শ্রমিকের দিনরাত এক করেও সেই কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। এরই মধ্যে রবিবার সকালে যাত্রী বিক্ষোভে অশান্ত হয়ে উঠল শিয়ালদহ মেন স্টেশন চত্ত্বর। রেল হল শহরের লাইফ লাইন। কিন্তু শুক্রবার থেকে পরিষেবা বিপর্যস্ত হলেও বিকল্প ব্যবস্থা না মেলায় যাত্রীদের নাকাল হতে হয়। 


শুক্রবার থেকেই বন্ধ রয়েছে শিয়ালদার প্রথম ৫টি প্ল্যাটফর্ম, ১২ বগির লোকাল ট্রেন চালানোর জন্য এই সিদ্ধান্ত। কারণ প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এতদিন বিষয়টি টিনের শেডে ঢেকে লাইনের কাজ করা হলেও এখন তা হচ্ছে শেষ পর্যায়ের ষকাজ। তার জেরে ট্রেন পরিষেবার সূচি বদল। ফলে ভোগান্তির মুখে পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। শুক্রবার থেকে সময় যত এগিয়েছে ততই বেড়েছে দুর্ভোগ। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, স্টেশনেই রাত কাটাতে হয়েছে অনেককে। বনগাঁ, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, থেকে শুরু করে এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীরাও পড়েছেন। এমনকি রাজধানীর মত ট্রেনও দু'ঘন্টা দেরিতে ছেড়েছে।  


শনিবার পর্যন্ত যা ছিল নিতান্ত অভিযোগ, তা ক্রমেই ক্ষোভে পরিণত হয়ে ওঠে। রবিবার সেই ক্ষোভ গণ্ডগোলের আকার নেয়, যার জেরে ভাংচুর চালান ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। ভেঙে যায় অনুসন্ধান অফিসের কাঁচ। পরে ঘটনাস্থালে আসে বিরাট পুলিশ বাহিনী। এরপরেই শান্ত হয় পরিস্থিতি।   


শনিবার রাতে অনেকেই থেকে গিয়েছেন শিয়ালদায়। অনেককেই ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান বাতিল করতে হয়েছে স্টেশনে এসে। আর নিত্যযাত্রীদের অনেককেই দেখা গিয়েছে লাইন ধরে হেঁটে গন্তব্য স্টেশনে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে। এমনকি বিধাননগর স্টেশন বা কাঁকুড়গাছি পয়েন্ট থেকে রেল লাইন ধরে হেঁটে অনেকে শিয়ালদহ পৌঁছেছেন। গত তিনদিন ধরে এটাই শিয়ালদা মেন ও বনগাঁ শাখার ছবি। প্রচণ্ড গরম। তার মধ্যে এই ভোগান্তি। এর মধ্যেই শুক্রবার প্রবল ভিড়ের চাপে ট্রেন থেকে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন মহম্মদ আলি হাসান আনসারি নামে ২২ বছরের এক যুবক। টিটাগড়ে ঘটা এই ঘটনা যেন সমস্ত ক্ষোভের ছবিতে বাড়তি হাওয়া দিয়েছে। পরিস্থিতি দুর্বিসহ সত্ত্বেও রেলের পক্ষ থেকে কোনও ঘোষণা নেই। মিলছে না কোনও খবর। কিছুই সঠিক ভাবে জানানো হচ্ছে না বলে অভিযোগ যাত্রীদের। 


সেই ক্ষোভ রবিবার সকাল থেকে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। সারা রাত ধরে স্টেশনে বসে থাকা যাত্রীদের একাংশ বলছেন, শনিবার স্টেশনে খাবারের দোকানেও খাবার পাওয়া যাচ্ছিল না। জল নিয়েও ছিল সমস্যা। এমনকি স্টেশনের পাবলিক ওয়াটার সিস্টেমেও জল ছিল না। এই অবস্থায় হঠাৎ যদি ট্রেনের ঘোষণা হলে ট্রেন ধরতে না পারার শঙ্কাও রয়েছে। সেই কারণে স্টেশন ছেড়ে বেরোতেও পারছিলেন না যাত্রীরা। সব মিলিয়ে খুব খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে সকলেই। এঁনাদের অনেকেই রাত কাটিয়েছেন প্ল্যাটফর্মে। সকালেও ট্রেন চলা নিয়ে রেলের কাছ থেকে কোনও সদুত্তর মেলেনি।   


ট্রেন বন্ধ থাকায় বাড়তি বাস চালানোর সিদ্ধান্ত হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। ফলে বাসেও ভিড় বাড়ছে মারাত্মকভাবে। এই দুর্ভোগের মাঝে পূর্ব রেলের সিপিআরও কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, যাত্রীদের সুবিধার জন্য চালানো হচ্ছে অতিরিক্ত মেট্রো। চলছে অতিরিক্ত সরকারি বাসও। রবিবার দুপুর ২টোর মধ্যে শেষ হয়ে যাবে সংস্কারের কাজ। আর তারপরই ধীরে-ধীরে স্বাভাবিক হয়ে যাবে পরিস্থিতি। কিন্তু ঘোষণা এবং বাস্তবের মধ্যে যে ফাঁক অনেক। ফলে উত্তপ্ত শিয়ালদা।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad