বিনোদন ডেস্ক, ০৭ জুন, ২০২৫: আমকে "ফলের রাজা" বলা হয় এবং এটি গ্রীষ্মের সবচেয়ে প্রিয় ফল। এটি শিশু থেকে বয়স্ক সকলেই খুব আগ্রহের সাথে খায়। বিশেষ বিষয় হল আমাদের দেশে প্রায় ১৫০০ জাতের আম পাওয়া যায়, যার প্রতিটির স্বাদ, সুগন্ধ এবং রঙ আলাদা। এর মধ্যে দশেরি, চৌনসা, কেশর, তোতাপুরি এবং ল্যাংড়া আম উল্লেখযোগ্য। তবে এই সকলের মধ্যে একটি নাম রয়েছে যা অন্যদের থেকে আলাদা এবং কিছুটা অদ্ভুতও - 'ল্যাংড়া আম'।
এই আমের স্বাদ যেমন মিষ্টি এবং অসাধারণ, এর নামও আলাদা। কিন্তু আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন কেন এই আমের নাম ল্যাংড়া রাখা হয়েছিল? এত সুস্বাদু এবং সুগন্ধযুক্ত আমের এই নাম হওয়ার কারণ কী ছিল? আসুন জেনে নেওয়া যাক এর পেছনের আকর্ষণীয় এবং ঐতিহাসিক গল্প।
'ল্যাংড়া আম' নামটি কোথা থেকে এসেছে?
বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গল্পটি প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো, যখন উত্তর প্রদেশের পবিত্র শহর বানারসে (বর্তমান বারাণসী) একটি মন্দিরে একজন প্রতিবন্ধী পুরোহিত থাকতেন। তার খুঁড়িয়ে হাঁটার কারণে লোকেরা তাকে 'ল্যাংড়া পূজারী' বলে ডাকতেন। একদিন একজন সাধু তাঁর কাছে এসে তাকেঊ একটি বিশেষ আমের বীজ দিয়েছিলেন, সেই সাথে আদেশ দিয়েছিলেন যে, যখন এই গাছ থেকে ফল বের হবে, তখন প্রথমে ঈশ্বরকে উৎসর্গ করতে হবে এবং তারপর তা ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করতে হবে।
সময়ের সাথে সাথে, সেই গাছ থেকে বের হওয়া আমের স্বাদ এতটাই অনন্য এবং মিষ্টি ছিল যে এটি সমগ্র বানারসে বিখ্যাত হয়ে ওঠে। কিন্তু যেহেতু সেই আমের কোনও পরিচয় বা নাম ছিল না, তাই লোকেরা সেই পুরোহিতের পরিচয়ের সাথে এটিকে 'ল্যাংড়া আম' নামে ডাকতে শুরু করে। পরবর্তীকালে এই নামটি সমগ্র ভারতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং আজও মানুষ এই সুস্বাদু জাতের আমটি খুব আগ্রহের সাথে খায়।
'ল্যাংড়া আম' এর আশ্চর্যজনক স্বাস্থ্য উপকারিতা -
বিশেষজ্ঞদের মতামত
এই জাতের আমের কেবল স্বাদই নয়, এটি পুষ্টিতেও সমৃদ্ধ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, ল্যাংড়া আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এর কিছু প্রধান উপকারিতা নিম্নরূপ:-
হৃদয়ের জন্য উপকারী: এতে উপস্থিত পটাশিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদয়কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
হজম উন্নত করে: উচ্চ ফাইবারের কারণে, এটি হজম ব্যবস্থা উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য বা গ্যাসের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী: ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তবে, সুগারের রোগীদের এটি সীমিত পরিমাণে এবং অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিৎ।
No comments:
Post a Comment