মার্কিন ধনকুবের এবং প্রযুক্তি মুঘল ইলন মাস্কের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের ইতি টানলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, মাস্ক যদি ট্রাম্পের বিরোধিতায় ডেমোক্র্যাটদের পাশে দাঁড়ান বা তাঁদের আর্থিকভাবে সহায়তা করেন, তবে তাঁর পরিণতি “ভয়ানক” হতে পারে—এমন কঠোর হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন ট্রাম্প।
শনিবার স্থানীয় সময় এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “হ্যাঁ, আমার মনে হয় আমাদের সম্পর্ক শেষ। ওঁর সঙ্গে আর কথা বলার কোনও ইচ্ছা আমার নেই।”
ঘনিষ্ঠতা থেকে সংঘাত: কী ঘটল?
ট্রাম্প প্রশাসনের সময় ইলন মাস্ক ছিলেন হোয়াইট হাউসের কাছের লোক। সরকারি ব্যয় হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার জন্য মাস্ককে দেওয়া হয়েছিল বিশেষ দফতরের (DOGE) দায়িত্ব। এমনকি ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারেও অংশ নিয়েছিলেন টেসলা ও স্পেসএক্স-এর প্রধান
কিন্তু সম্প্রতি ট্রাম্পের তদারকিতে তৈরি একটি ব্যয়সংক্রান্ত বিলকে ঘিরে শুরু হয় উত্তেজনা। মাস্কের মতে, বিলটি দেশের অর্থনীতিকে বিপদে ফেলবে এবং তাঁর সাশ্রয়ের পরিকল্পনাকে ব্যর্থ করে দেবে। এরপর থেকেই দু’জনের সম্পর্কে ফাটল ধরতে শুরু করে।
বিল পাসে অনিশ্চয়তা, রাজনৈতিক চাপ বাড়ছে
বিতর্কিত বিলটি হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে পাস হলেও এখনো সেনেটে পাস হয়নি। সেখানে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যা প্রায় কাছাকাছি। এই অবস্থায় মাস্ক যদি ডেমোক্র্যাটদের পাশে গিয়ে বিলটি আটকে দিতে সাহায্য করেন, তাহলে তা ট্রাম্পের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ট্রাম্প বলেছেন, “আমরা আশা করি বিলটি পাস হবে। কিন্তু যদি মাস্ক ডেমোক্র্যাটদের অর্থসাহায্য করেন, তাহলে ফলাফল গুরুতর হতে পারে।” যদিও কী ধরনের “পরিণতি” হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেননি তিনি।
নতুন দল গঠনের ইঙ্গিত মাস্কের, উদ্বেগে রিপাবলিকান শিবির
আরও চমকপ্রদ তথ্য—ইলন মাস্ক নিজেই নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এমন হলে রিপাবলিকানদের ভোট ভাগ হয়ে যেতে পারে, বিশেষ করে প্রযুক্তি-ঘনিষ্ঠ তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। এতে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের লড়াই আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
সম্পর্ক ভাঙনের রাজনীতি
ট্রাম্প-মাস্কের সম্পর্কের এই নাটকীয় ভাঙন কেবল ব্যক্তিগত নয়, বরং এর জোরাল রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। দুই প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের এই সংঘর্ষে আগামী মার্কিন রাজনীতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠবে বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের।
No comments:
Post a Comment