কলকাতা, ২০ জুন ২০২৫, ১৯:১৫:০১ : শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। তাকে লালবাজার পুলিশ সদর দপ্তরের লকআপে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ঘটনা কেবল রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেনি, বিজেপি এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে সংঘর্ষও বৃদ্ধি পেয়েছে।
শুক্রবার সকালে ঘটনাটি শুরু হয়, যখন সুকান্ত মজুমদার বিজেপি আয়োজিত 'পশ্চিমবঙ্গ দিবস' কর্মসূচিতে যোগদানের জন্য বাইকে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন।
পথে পুলিশ তাকে থামিয়ে দেয় এবং এগিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। তা সত্ত্বেও, সুকান্ত একা বাইকে এগিয়ে যান। অনুষ্ঠানের পরে, তিনি বিখ্যাত ডাক্তার রজত শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে দেখা করতে বেরিয়ে যান, কিন্তু বিকেলে আবারও পুলিশ তাকে হরিশ মুখার্জি রোডে থামায়।
পুলিশ বলছে যে নিরাপত্তার কারণে তাকে থামানো হয়েছিল, অন্যদিকে বিজেপি অভিযোগ করছে যে এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ। সুকান্ত মজুমদারকে প্রায় এক ঘন্টা গাড়িতে আটকে রাখা হয়, এরপর তাকে জোর করে পুলিশের গাড়িতে বসাতে হয়। এই সময় ডঃ বন্দোপাধ্যায়ও তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন এবং তাকেও আটক করা হয়।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার পুলিশের এই পদক্ষেপে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, "আমি জানি না কেন আমাদের আটক করা হয়েছে। পৃথিবীর কোথাও এমনটি ঘটে না।" তিনি দাবী করেন যে তাকে বিজেপি সমর্থকদের সাথে কলকাতার লালবাজারে পুলিশ লকআপে আটক করে রাখা হয়েছে।
ডঃ রজতসুব্রা বন্দোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে বলেন যে এটি কেবল একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল, এবং তার মা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সাথে দেখা করতে উত্তেজিত ছিলেন। কিন্তু টিভিতে পুলিশের সাথে সুকান্ত মজুমদারকে দেখার পর তিনি ঘাবড়ে যান এবং কাঁদতে শুরু করেন। ডাক্তার বলেন, "তিনি আমাকে তাকে আসতে বাধা দিতে বলেছিলেন।"
এই পুরো ঘটনার পর, বিজেপি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। দলের নেতারা এটিকে গণতান্ত্রিক অধিকারের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। বিজেপি বলছে, এটি বাংলা সরকারের "স্বৈরাচারী প্রবণতা" প্রতিফলিত করে, যেখানে বিরোধী নেতাদের স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে এবং দেখা করতেও দেওয়া হচ্ছে না।
এখনও পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও বিস্তারিত বিবৃতি দেওয়া হয়নি, তবে সূত্র জানিয়েছেন, নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে, বিজেপি নেতারা এই যুক্তি মানতে প্রস্তুত নন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ধরনের ঘটনা বিজেপি এবং ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। বিজেপি এই বিষয়ে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে এবং বলেছে যে তাদের নেতাদের সাথে এই ধরনের আচরণ অব্যাহত থাকলে তারা রাজ্যব্যাপী বিক্ষোভ করবে।
No comments:
Post a Comment