পিরিয়ডের সময় ব্যয়াম করা কি আদৌ উচিৎ? ভালো থাকতে যা করবেন - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Monday, June 16, 2025

পিরিয়ডের সময় ব্যয়াম করা কি আদৌ উচিৎ? ভালো থাকতে যা করবেন


লাইফস্টাইল ডেস্ক, ১৬ জুন ২০২৫: বর্তমান সময়ে অনেকেই খুব স্বাস্থ্য সচেতন, বিশেষ করে মহিলারা। এর জন্য ব্যয়াম থেকে শুরু করে যোগা অনেক কিছুই তাঁরা করে থাকেন। কিন্তু সেইসঙ্গে একটা প্রশ্ন বারবার মনে আসে যে, মাসিক বা পিরিয়ডের সময় কী ব্যয়াম করা উচিৎ? এর সহজ উত্তর হল না করাই ভালো। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, পিরিয়ডের সময় ব্যয়াম করা যাবে না এমন কোনও কথা নেই। কিন্তু এই সময় যেহেতু শরীর একটু বেশি দুর্বল থাকে, তাই সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি। 


কিছু কাজ রয়েছে যা এই সময় করলে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে পারে। তবে নিয়মিত ব্যায়াম পিরিয়ডের আগে এবং সমকালীন ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। পিরিয়ডের সময় ব্যায়াম করা সাধারণত নিরাপদ এবং উপকারী হতে পারে, তবে এটি আপনার শরীরের অনুভূতি অনুযায়ী সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিৎ। এছাড়াও সামান্য হাঁটাহাঁটি দৌড়ানো যোগ ব্যায়াম করলে শরীরের ক্ষতি হয় না বরং হালকা কার্ডিয়ো, যোগ এই সময় উপকারী। 


পিরিয়ডের সময় ব্যায়ামের উপকারিতা-

১. মাসিকের ব্যথা কমায়: হালকা কার্ডিও যেমন হাঁটা বা সাইক্লিং মাসিকের ব্যথা উপশমে সাহায্য করে। ব্যায়াম রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং এন্ডোরফিন নিঃসরণ করে, যা প্রাকৃতিক ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে।  


২. মুড উন্নত করে: ব্যায়াম সেরোটোনিন এবং ডোপামিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটার বাড়ায়, যা মানসিক অবস্থা উন্নত করে এবং পিরিয়ডের সময় মুড সুইং কমাতে সাহায্য করে।  


৩. শক্তি বৃদ্ধি করে: হালকা ব্যায়াম ক্লান্তি কমাতে এবং শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে, যা পিরিয়ডের সময় সাধারণত কমে যায়।  


৪. ঘুমের মান উন্নত করে: ব্যায়াম শরীরের প্রাকৃতিক ছন্দ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা ভালো ঘুমে সহায়ক।  



৫. মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: নিয়মিত ব্যায়াম মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, বিশেষ করে যারা পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (পিসিওএস) বা অনিয়মিত চক্রে ভুগছেন।  


পিরিয়ডের সময় উপযুক্ত ব্যায়াম-


হাঁটা: হালকা হাঁটা মাসিক ব্যথা কমাতে এবং মুড উন্নত করতে সাহায্য করে।  


যোগব্যায়াম: যোগের কিছু আসন যেমন চাইল্ড পোজ, ক্যাট-কাউ পোজ, এবং কোবরা পোজ মাসিক ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।  


সাইক্লিং: মাঝারি গতিতে সাইক্লিং মাসিক ব্যথা এবং ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।  


পিলেটস: পিলেটস মূল পেশী শক্তিশালী করতে এবং নমনীয়তা বাড়াতে সাহায্য করে।  


হালকা কার্ডিও: হালকা কার্ডিও ব্যায়াম যেমন জগিং বা এলিপটিক্যাল মেশিন ব্যবহার মাসিক ব্যথা এবং ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে।  



এড়িয়ে চলা উচিৎ এমন ব্যায়াম-

উচ্চ-প্রভাবযুক্ত ব্যায়াম: উচ্চ-প্রভাবযুক্ত ব্যায়াম যেমন হাই-ইন্টেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং (এইচআইআইটি) মাসিক ব্যথা এবং ক্লান্তি বাড়াতে পারে।  


ভার উত্তোলন: ভার উত্তোলন মাসিক ব্যথা বাড়াতে পারে, তাই হালকা ওজন ব্যবহার করা উচিৎ। সবচেয়ে ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে করা। 


অতিরিক্ত তাপমাত্রায় ব্যায়াম: গরম যোগ বা অতিরিক্ত গরম পরিবেশে ব্যায়াম মাসিক ব্যথা বাড়াতে পারে।  


ইনভার্সন যোগ আসন: ইনভার্সন আসন যেমন হেডস্ট্যান্ড বা শোল্ডার স্ট্যান্ড মাসিক সময়ে এড়িয়ে চলা উচিৎ।  



সতর্কতা-

শরীরের সংকেত শুনুন: যদি আপনি ক্লান্ত, অসুস্থ বা ব্যথা অনুভব করেন, তাহলে বিশ্রাম নিন। 


হাইড্রেটেড থাকুন: জল পান করুন, কারণ ডিহাইড্রেশন মাসিক ব্যথা বাড়াতে পারে।  


আরামদায়ক পোশাক পরুন: ঢিলেঢালা এবং আরামদায়ক পোশাক পরুন।  


পিরিয়ড প্রোটেকশন সঙ্গে রাখুন: ব্যায়ামের সময় পিরিয়ড প্রোটেকশন যেমন প্যাড, ট্যাম্পন বা মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করুন।  



মনে রাখবেন, পিরিয়ডের সময় ব্যায়াম করা আপনার শরীরের অনুভূতির ওপর নির্ভর করে। হালকা ব্যায়াম যেমন হাঁটা, যোগব্যায়াম, সাইক্লিং বা পিলেটস মাসিক ব্যথা কমাতে, মুড উন্নত করতে এবং শক্তি বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। তবে, যদি আপনি ক্লান্ত বা অসুস্থ অনুভব করেন, তাহলে বিশ্রাম নেওয়া উচিৎ। আর এইসব কিছুর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নিন।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad