গ্রীষ্মে ফোটা এই সুন্দর হলুদ ফুলের ক্বাথ বা পেস্ট ব্যবহারের শত উপকার; শরীর হবে ডিটক্সিফাই, দূরে যাবে অ্যালার্জি

লাইফস্টাইল ডেস্ক, ২৭ মে ২০২৫: আমলতাস এমন একটি গাছ যার মূল, বাকল, পাতা, ফল এবং ফুল, সবই স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। আজকাল, এই গাছে হলুদ ফুল ফুটেছে যা গ্রীষ্মের ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রায় স্বস্তি দেয়। এই ফুলগুলি তাপপ্রবাহ থেকেও রক্ষা করে। এই ফুলের ঔষধি গুণ রয়েছে। সুস্থ থাকতে চাইলে এর ফুল নানাভাবে ব্যবহার করতে পারেন। 

এর প্রভাব ঠাণ্ডা- আয়ুর্বেদ আচার্য এস. পি. কাটিয়ার বলেন যে, আমলতাস ফুল কোনও ঔষধের চেয়ে কম নয়। এর প্রভাবে শীতলতা আসে, যা গ্রীষ্মকালে তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষা করে। কারও জ্বর হলে, এটি শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং শরীরের ব্যথাও কমায়। এটি লুজ মোশনের সমস্যারও সমাধান করে। কিন্তু এটি সঠিক পরিমাণে খাওয়া উচিৎ আর খাওয়ার আগে, অনুগ্রহ করে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।   

সকালে খালি পেটে ক্বাথটি পান করতে পারেন- আমলতাসের ফুল ছিঁড়ে শুকিয়ে নিন। প্রতিদিন এক গ্লাস জলে ৬ থেকে ৮টি ফুল ফুটিয়ে নিন। জল অর্ধেক হয়ে গেলে, ছেঁকে নিন। এই ক্বাথটি দিনে একবার খালি পেটে পান করুন। এটি শরীরকে বিষমুক্ত করতে সাহায্য করবে। শরীরের অমেধ্য সঠিকভাবে দূর হবে, রক্ত বিশুদ্ধ হতে শুরু করবে এবং পাকস্থলীর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। কেউ যদি কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন, তাহলে এটি তাঁর জন্য খুবই উপকারী।

চা পানে সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকবে- আমলতাস ফুল দিয়ে তৈরি চাও খুবই উপকারী। এর জন্য শুকনো ফুল জলে ফুটিয়ে নিন। হলুদ রঙ ছাড়তে শুরু করলে গ্যাস বন্ধ করে দিন। এতে লেবু যোগ করে পান করুন। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাঁরা এই চা পান করতে পারেন। এতে রক্তে চিনি নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এতে ক্যালোরিও কম থাকে। এটি ওজন কমাতেও সাহায্য করবে। এছাড়াও, চিনি কমাতে এর ফুলের গুঁড়োও খেতে পারেন। দুপুরের খাবার বা রাতের খাবারের পর হালকা গরম জলের সাথে আধা চা চামচ এটি খেতে পারেন। 

চর্মরোগ সেরে যাবে- যাদের শরীরে ফোঁড়া, গরমের কারণে ফুসকুড়ি, চুলকানি বা যেকোনও ধরণের ত্বকের অ্যালার্জি আছে, তাঁদের জন্য আমলতাসের ফুল খুবই উপকারী। এতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা এই সমস্যাগুলি দূর করতে সাহায্য করে। এর জন্য, এই তাজা ফুলের পেস্ট তৈরি করুন এবং ত্বকের আক্রান্ত অংশে ২০ মিনিটের জন্য লাগান। এর পর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আপনি এই পেস্টটি ক্ষত বা পোড়া জায়গায়ও লাগাতে পারেন। কয়েক দিনের মধ্যেই আপনি এর সুফল দেখতে শুরু করবেন। এছাড়াও, আপনি এর ফুল শুকিয়ে একটি বায়ুরোধী পাত্রে রাখতে পারেন এবং প্রতিদিন আপনার স্নানের জলে এর ফুল যোগ করতে পারেন। এতে ত্বক সম্পর্কিত সমস্যাও দূর হবে।   

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে- আমলতাস ফুল দিয়ে তৈরি চা, ক্বাথ পান অথবা গুঁড়ো করে খান; যেকোনও রূপে এটি গ্রহণ করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এটি অনেক ধরণের রোগ দূরে রাখে। যারা কাশি, সর্দি বা গলা ব্যথায় ভুগছেন, তাঁদের সমস্যাও সেরে যায়। এটি হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখে। এই ফুলের কারণে হৃদপিণ্ড ভালোভাবে কাজ করে, এর পেশী শক্তিশালী হয় এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়, যা রক্ত জমাট বাঁধা বা হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।