মস্তিষ্কের ওপর প্রভাব ফেলছে জনপ্রিয় এই অ্যাপ! ক্রমাগত ব্যবহারে দুর্বল হচ্ছে চিন্তাভাবনা-বোঝার ক্ষমতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক, ২৪ জুন ২০২৫: অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মের মতই বর্তমানে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে চ্যাটজিপিটি (ChatGPT)। আপনি যদি প্রতিদিন চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করেন; কখনও কাজের জন্য, কখনও পড়াশোনার জন্য, কখনও সময় কাটানোর জন্য, তাহলে আপনার একটা জিনিস জানা উচিৎ। এই টুলটি যতটা শক্তিশালী, ততটাই বিপজ্জনকও হতে পারে। যেহেতু মানুষ চ্যাটজিপিটি-কে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে এমন একটি সুপারহিরো হিসেবে বিবেচনা করতে শুরু করেছে, তবে এতে তাদের নিজস্ব চিন্তাভাবনা এবং বোঝার ক্ষমতাও প্রভাবিত হচ্ছে। এটি কেবল একটি টুল, কিন্তু অনেকেই এটিকে তাদের মস্তিষ্কে পরিণত করেছে। আপনি যদি চিন্তা না করেই সবকিছুর জন্য এআই-এর সাহায্য নেন, তাহলে সতর্ক থাকুন। এতে করে আপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতা, অর্থাৎ আপনার চিন্তাভাবনা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে পারে।

আমরা যখন বারবার কোনও প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করি, তখন আমাদের মস্তিষ্ক 'শর্টকাট মোডে' চলে যায়। নিজের মন-মস্তিষ্ক দিয়ে চিন্তা করে আমরা যে কাজ করতে পারতাম - যেমন যুক্তি, শব্দ নির্বাচন, ধারণা গঠন - এখন মেশিনের মাধ্যমেই তা করা হচ্ছে। ফলস্বরূপ, আমাদের সৃজনশীল চিন্তাভাবনা এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা ধীরে ধীরে দুর্বল হতে শুরু করে।

সবকিছু অন্ধভাবে বিশ্বাস করা বিপজ্জনক হতে পারে-

এআই-কে ১০০ শতাংশ বিশ্বাস করা কখনও কখনও ব্যয়বহুল প্রমাণিত হতে পারে। চ্যাটজিপিটির উত্তরগুলি সর্বদা সঠিক হয় না - কখনও কখনও অসম্পূর্ণ তথ্য, কখনও কখনও সম্পূর্ণ ভুল। কিন্তু মানুষ এটিকে সত্য বলে বিশ্বাস করে এগিয়ে যায়, যা ভুল জ্ঞানের ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণা এবং তদন্তের অভ্যাস ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যায়।

লেখার এবং প্রকাশের শক্তিও ম্লান হয়ে যাচ্ছে-

আমরা যখন প্রতিটি নিবন্ধ, প্রতিটি ইমেল এবং প্রতিটি অ্যাসাইনমেন্টের জন্য এআই-এর সাহায্য নিই, তখন আমাদের নিজের লেখার অভ্যাস ম্লান হতে শুরু করে। ভাষার ওপর দখল দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ধীরে ধীরে নিজেকে প্রকাশ করার ক্ষমতা হ্রাস পায়।

এটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সতর্কতার চেয়ে কম নয়-

আজ অনেক শিক্ষার্থী হোমওয়ার্ক, পরীক্ষার প্রস্তুতি এবং প্রকল্পগুলিতে সরাসরি এআই-এর সাহায্য নিচ্ছে। এই অভ্যাসটি শুরুতে সহজ মনে হতে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এটি তাদের শেখার প্রক্রিয়াকে ফাঁপা করে দেয় এবং যখন চিন্তা করার প্রয়োজন হয়, তখন মন খালি মনে হয়।

তাহলে এর থেকে বেরিয়ে আসার উপায় কী নেই? আছে, নিশ্চয়ই আছে। যেমন -

- চ্যাটজিপিটিকে একটি সহায়ক হিসাবে ব্যবহার করুন, বিকল্প নয়।

- আপনি যে উত্তরগুলি পেয়েছেন তা পরীক্ষা করুন, সেগুলি বুঝুন এবং তারপর সেগুলি ব্যবহার করুন।

- গবেষণা, পড়া এবং চিন্তা করার অভ্যাস কখনও ত্যাগ করবেন না।

- আপনার মনকে অলস হতে দেবেন না - নিজে ভাবুন, নিজে লিখুন এবং আপনার সৃজনশীলতাকে স্বাধীনভাবে উড়তে দিন।